রবিবার, ১২ মে ২০২৪, ০৭:৫৫ পূর্বাহ্ন

পিসে কিনে তরমুজ কেজিতে বিক্রি

মহানন্দ অধিকারী মিন্টু, পাইকগাছা (খুলনা) প্রতিনিধি
  • আপডেট সময় : 5:27 pm, শনিবার, ২৭ এপ্রিল, ২০২৪

খুলনার পাইকগাছায় তরমুজ ভোক্তারা সিন্ডিকেটের হাতে জিম্মি হয়ে পড়েছে। কৃষকের ক্ষেত থেকে তরমুজ পিসে বাজেরে ক্রেতার নিকট কেজিতে বিক্রি করা হচ্ছে। ক্রয় অপেক্ষা কয়েক গুন বেশি দরে বিক্রয় করা হচ্চে। তীব্র তাপদাহে চাহিদা থাকায় এসব খুচরা ব্যবসায়ীরা বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। তরমুজ সকালের দিকে কিছুটা দাম কম রাখলেও প্রখর দুপুর রৌদ্রে কেজি প্রতি ৪০ টাকা দরে বিক্রি করা হচ্ছে। নিয়মিত বাজার মনিটরিং না থাকায় তৃষ্ণাত্ব ভোক্তার পকেট কাটছে তারা। চলতি মৌসুমে পাইকগাছায় ১৪৪৫হেক্টর জমিতে ৫৫হাজার মেট্রিক টন তরমুজ উৎপাদিত হয়েছে। এ অঞ্চলের তরমুজের বাজারমূল্য ৭৭ কোটি টাকা ছাড়িয়ে যাবে বলে দাবি করছে উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর। উৎপাদিত এসব তরমুজ ন্যায্য মূল্যে বিক্রি করতে পেরে খুশি কৃষক। উপক‚লীয় উপজেলা পাইকগাছায় বেড়ীবাঁধের মধ্যে মিষ্টি পানির আঁধার তৈরি করে দেলুটি, গড়–ইখালী ও চাঁদখালী ইউনিয়ানে তরমুজের চাষ হয়েছে। তীব্র তাপদাহে মৌসুম ফল হিসেবে তরমুজের দিকে ঝুঁকছে সাধারণ ক্রেতারা। ক্রেতা সাধারণ বলছে, সম্প্রতি সময় খুচরা তরমুজ ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। বাণিজ্যিক শহর কপিলমুনি ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট বলছে, তরমুজ মৌসুমী ফল হলেও উৎপাদন থেকে শুরু করে বাজারজাত হওয়া পর্যন্ত কৃষকের খরচ আগের তুলনায় দ্বিগুণ হারে বেড়েছে। প্রথমে তরমুজ চাষীদের কাজ থেকে ক্ষেত ধরে কিনে শ্রমিক দিয়ে তা উত্তলোন করে প্রথমে ঘাটাল করতে হয়। এরপর পরিবহন যোগে আবারো শ্রমিক দিয়ে উঠিয়ে এনে বাজারজাত করে ক্রেতা সাধারণের কাছে বিক্রয় করা হয়। যে কারণে ক্ষেতের দর আর খুচরা পর্যায় বাজার মূল্য ২০ টাকা করে বাড়িয়ে ৪০ টাকা করে বিক্রয় করা হচ্ছে। শ্রমিক ও পরিবহন খরচ বেশি হওয়ায় তরমুজের বাজার মূল্য তুলনামূলক একটু বেশি। সরেজমিনে উপজেলার কপিলমুনিসহ অন্যান বাজার ঘুরে দেখাগেছে, বাজারজাত একটি তরমুজের নূন্যতম ওজন ২ কেজি থেকে ৮/১০ কেজি। যাহা প্রতি পিস মূল্য আসছে ৮০ থেকে ৪০০ শত টাকা পর্যন্ত। কিন্তু কৃষকদের ক্ষেত পর্যায়ে পিস প্রতি ক্রয় করা হচ্ছে ১০ টাকা থেকে ২০০ টাকা পর্যন্ত। সবমিলিয়ে পিস প্রতি বাজার মূল্য দ্বিগুণ থেকে তিনগুণ। উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, উপজেলায় এ বছর তরমুজের আবাদ হয়েছে ১ হাজার ৪ শত ৪৫ হেক্টর জমিতে। হেক্টর প্রতি ফলন ৩৮ থেকে ৪২ টন। মোট ফলন ৫৪ হাজার ৯১০টন। যার বাজার মূল্য ৭৬ কোটি ৮৭ লক্ষ ৪০ হাজার টাকার বেশী হবে। পাইকগাছায় ১০টি ইউনিয়ন মধ্য ৩টি ইউনিয়নে তরমুজ চাষ করা হচ্ছে। এর মধ্যে গড়–ইখালী, দেলুটি ও চাঁদখালীতে তরমুজ চাষ হয়। সবচেয়ে বেশি আবাদ হয়েছে দেলুটি ইউনিয়নে। উপক‚লের লবণপানির এলাকায় গড়–ইখালী ইউনিয়নের ঘোষখালী নদী ও দেলুটি ইউনিয়নের ডিহিবুড়া খাল খননে বৃষ্টির (মিষ্টি) পানি সংরক্ষণ করে তরমুজের চাষ করা হয়েছে। সরেজমিনে দেখা গেছে, মাঠের পর মাঠ তরমুজ ক্ষেত। চারদিকে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রয়েছে তরমুজ। আবহাওয়া অনুক‚লে থাকায় ফলন ভালো হয়েছে। এ বিষয়ে পাইকগাছা উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ অসিম কুমার দাশ জানান, এ বছর তরমুজের ফলন ভালো হয়েছে। তবে মিষ্টি পানির পর্যাপ্ত ব্যবস্থা না থাকায় তরমুজ চাষে কিছুটা সমস্যা হয়েছে। এসব এলাকায় খাল খনন করে মিষ্টি পানি সংরক্ষণ করতে পারলে তরমুজের চাষ আরও বাড়ানো যেত। এ ব্যাপারে পাইকগাছা উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মাহেরা নাজনীন বলেন, তরমুজ পিস হিসেবে কিনে ক্রেতা পর্যায়ে কেজি দরে বিক্রয় করা যাবেনা। যদি কোন তরমুজ ব্যবসায়ী এমনটি করে থাকে তাহলে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

সংবাদটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

এই রকম আরো জনপ্রিয় সংবাদ
© All rights reserved © 2017 Cninews24.Com
Design & Development BY Hostitbd.Com