বিশেষ প্রতিবেদক : ছেলেধরা ও ডাকাত বলে গুজব তুলে চিৎকার করে স্ত্রীর প্রেমিককে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। পৃথক ঘটনায় আরো এক অজ্ঞাত যুবকের লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। সোমবার ভোররাতে ঢাকা জেলার ধামরাই থানার পৃথক দু’টি স্থানে এ ঘটনা ঘটে। এদিকে ছেলেধরা গুজবে হত্যার শিকার সাভারে অজ্ঞাত নারী, ধামরাই ও কেরানীগঞ্জে দুই যুবকের পরিচয় গত কয়েকদিনেও পুলিশ উদ্ধার করতে পারেনি।ধামরাই থানা পুলিশ জানায়, সোমবার ভোর রাতে ধামরাইয়ের রোয়াইল ইউনিয়নের কৃষ্ণনগর গ্রামের ফজর আলীর প্রবাসী ছেলে আবুল কালাম আজাদ (৩১) কে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় ছয়জনকে আটক করা হয়েছে। এলাকাবাসী জানায়, নিহত প্রবাসী আবুল কালাম আজাদের সাথে একই এলাকার সাইফুলের স্ত্রী রোজিনার পরকীয়া চলে আসছিল। এরই জের ধরে সোমবার ভোররাতে কৌশলে আজাদকে ডেকে বাড়ি নিয়ে আসে সাইফুল ও রোজিনা। এরপর সাইফুল ছেলেধরা ও ডাকাত বলে চিৎকার করলে প্রতিবেশীরা ছুঁটে এসে আজাদকে গণপিটুনি দেয়। এতে ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় তার। এ ঘটনায় প্রেমিকা রোজিনা, স্বামী সাইফুল ইসলামসহ ছয়জনকে আটক করেছে পুলিশ।
অপর ঘটনায়, সোমবার ভোরে আটি মাইটান এলাকায় অজ্ঞাত ৩০ বছর বয়সী এক যুবককে পিটিয়ে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। পুলিশ তার লাশ উদ্ধার করেছে। কেরানীগঞ্জ মডেল থানার হজরতপুরের রসুলপুর গ্রামে আমিনুল ইসলামের বাড়ির কাছে গত শুক্রবার রাতে ছেলে ধরা সন্দেহে দুইজন অজ্ঞাত ব্যাক্তিকে গণপিটুনি দেয় উত্তেজিত জনতা। ঘটনাস্থলেই ২৮ বছর বয়সী এক যুবকের মৃত্যু হয়। আহত আরেকজনকে কেরানীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। এ ঘটনায় নিহত ও আহত কারো নাম পরিচয়ই জানা সম্ভব হয়নি বলে জানান থানার সাব-ইন্সপেক্টর বিপুল দাস। তিনি আরো বলেন, আহত ব্যক্তিটি জ্ঞান ফিরে পেলেও কোন কথাই বলছেন না। যে কারনে নিহত বা আহত কারো পরিচয় উদ্ধার করা সম্ভব হচ্ছেনা।
এদিকে, গত শনিবার সকালে সাভারের হেমায়েতপুরে ছেলেধরা সন্দেহে এক অজ্ঞাত নারীকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় ৮’শ জন অজ্ঞাত জনতার নামে মামলা হলেও নিহতের পরিচয় উদ্ধার করা যায়নি বলে জানায় পুলিশ। সাভার মডেল থানার ওসি এএফএম সায়েদ জানান, নিহত নারীর লাশ হাসপাতালের হিমাঘরে সংরক্ষণ করা আছে। নিহতদের পরিচয় সনাক্তে পুলিশ আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। ঢাকা জেলায় গত চারদিনে চারজনের মৃত্যুর ঘটনায় জনমনে আতংক বিরাজ করছে। গুজবে কান না দিয়ে আইনকে নিজের হাতে তুলে না নিতে প্রচার- প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছে ঢাকা জেলা পুলিশ।