বুধবার, ১৯ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ০৪:৫২ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
বহুমুখী সংকটের মধ্যেও জনগণের আশা-আকাঙ্ক্ষা পূরণে সরকার অঙ্গীকারাবদ্ধ : নাহিদ শেখ হাসিনা ও ফ্যাসিবাদী দলের নেতাদের সম্পত্তিতে হামলা না করতে প্রধান উপদেষ্টার আহ্বান দেশবাসীর প্রতি জামায়াত আমিরের আহ্বান কুদালিছড়া-ডুপাবিল খাল খননে অনিয়মের অভিযোগ দায়ের-জেলা প্রশাসক হাতিয়ার সাবেক এমপি মোহাম্মদ আলীর দুই বাড়ি ও ১১ নৌযানে আগুন আলুর বাম্পার ফলনের আশায় মুন্সীগঞ্জের কৃষকরা অভিনেত্রী সোহানা সাবা আটক বিদেশি প্রভাব ও রাশিয়ার নিষেধাজ্ঞা সংক্রান্ত টাস্কফোর্স কমাবে যুক্তরাষ্ট্র লেবাননে হিজবুল্লাহর একাধিক স্থাপনায় ইসরাইলের হামলা দেশের চলমান পরিস্থিতি নিয়ে যা বলল বিএনপি

ভ্যানচালক থেকে পঙ্গু, মানবেতর জীবনযাপন করছেন ফরিদুল

আজিজুল ইসলাম, সিরাজগঞ্জ
  • আপডেট সময় : 5:24 pm, শনিবার, ১৪ ডিসেম্বর, ২০২৪

দুই বছর আগে জীবিকার সন্ধানে ভ্যান নিয়ে সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার পিপুলবাড়ীয়া বাজারে গাছের গুঁড়ি নামানোর সময় মারাত্মক দুর্ঘটনায় পঙ্গু হয়ে যান রতনকান্দি ইউনিয়নের সড়াতৈল গ্রামের ফরিদুল ইসলাম (৩০)। মেরুদণ্ডে গভীর আঘাত, বাম পা ভেঙে যাওয়া এবং পিঠে বড় ক্ষত নিয়ে অক্ষম হয়ে পড়া ফরিদুল এখন স্ত্রী ও চার কন্যা সন্তান নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন।

ফরিদুল ইসলাম ২০২২ সালে তার ব্যক্তিগত ভ্যানে গাছের গুঁড়ি বোঝাই করে পিপুলবাড়ীয়া বাজারে যান। সেখানে গুঁড়ি নামানোর সময় ভারসাম্য হারিয়ে গুঁড়িটি তার মাজার উপর পড়ে। এতে তার মেরুদণ্ড, পিঠের নিচের অংশ এবং বাম পা গুরুতরভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তৎক্ষণাৎ তাকে সিরাজগঞ্জ ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হলেও চিকিৎসক না থাকায় তাকে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। সেখানে দেড় মাস চিকিৎসার পর অর্থাভাবে বাড়ি ফিরতে হয়।

পরে শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু সেখানে দেড় মাস চিকিৎসার পর অর্থ সংকটের কারণে আবারও চিকিৎসা বন্ধ হয়ে যায়। বর্তমানে তার দুই পা শুকিয়ে চিকন হয়ে গেছে, এবং চলাফেরার ক্ষমতা হারিয়ে পিঠের নিচে বড় একটি ক্ষত নিয়ে দিন কাটাচ্ছেন।

ফরিদুল ছিলেন তার পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি। তার অক্ষমতায় পরিবারটি দারিদ্র্যের চরমে পৌঁছেছে। তার বাবা আব্দুল মজিদ বলেন, “ছেলে ভ্যান চালিয়ে চার মেয়েকে নিয়ে ভালোভাবেই দিন কাটাচ্ছিল। কিন্তু একটি দুর্ঘটনা সব কিছু শেষ করে দিয়েছে। এখন টাকার অভাবে ছেলের চিকিৎসা করাতে পারছি না, এমনকি পরিবারের খাবার জোগাড় করাও কঠিন হয়ে গেছে।”

ফরিদুলের ছোট মেয়ে কাঁদতে কাঁদতে জানায়, “আমাদের বাবা পঙ্গু হয়ে গেছে। আমাদের খাওয়ার জন্য কোনো টাকা নেই। আমরা খুব কষ্টে আছি।”

ফরিদুল ইসলাম বলেন, “আমার যদি কোনো স্থায়ী আয়ের ব্যবস্থা করা যেত, যেমন একটি ছোট দোকান, তাহলে পরিবারের জন্য কিছু করতে পারতাম। এখন আমি পুরোপুরি অক্ষম। চার মেয়ের ভবিষ্যৎ কী হবে, এই দুশ্চিন্তায় দিন কাটাচ্ছি।” তিনি স্থানীয় প্রশাসন, বিত্তবান ব্যক্তি ও সরকারের কাছে তার চিকিৎসা ও পুনর্বাসনের জন্য সাহায্যের আবেদন জানিয়েছেন।

গ্রামবাসীরা জানিয়েছেন, ফরিদুলের পরিবারটি দীর্ঘদিন ধরে দুর্বিষহ অবস্থার মধ্যে আছে। তাদের সহযোগিতার চেষ্টা করলেও প্রয়োজনীয় খরচ মেটানো সম্ভব হয়নি। স্থানীয় প্রশাসনের সহযোগিতা পেলে তার জীবন বদলাতে পারে বলে তারা আশা প্রকাশ করেছেন।

ফরিদুল ইসলাম ও তার পরিবারকে স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনতে সরকারের পাশাপাশি সমাজের সহৃদয় মানুষদের এগিয়ে আসা প্রয়োজন। চিকিৎসা এবং একটি স্থায়ী আয়ের উৎসের ব্যবস্থা হলে ফরিদুলের পরিবার আবার ঘুরে দাঁড়ানোর সুযোগ পাবে।

সংবাদটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

এই রকম আরো জনপ্রিয় সংবাদ
© All rights reserved © 2017 Cninews24.Com
Design & Development BY Hostitbd.Com