জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে শুধু পূর্ণ বয়স্করাই যুদ্ধ করেনি, সবাই মিলে যুদ্ধ করেছে। কোলের শিশুও শাহাদতবরণ করেছে। ৮০ বছরের বৃদ্ধও শাহাদতবরণ করেছে। একইসঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে লড়াই করেছি। আমাদের এই জাতীয় ঐক্য ধরে রাখতে হবে। এই ঐক্যের কোনো ফাঁক দিয়ে যেন কেউ ঢুকে ঐক্য বিনষ্ট করতে না পারে। এজন্য ছাত্রজনতা বাংলাদেশের সব জনগণকে সজাগ থাকতে হবে।
শুক্রবার রাতে যশোর শহরের চাঁচড়া চেকপোস্ট মোড়ে পথসভায় তিনি এই মন্তব্য করেন।
জামায়াতের আমির ড. শফিকুর রহমান বলেন, পতিত সরকারের আমলে সবচেয়ে মজলুম দল ছিল জামায়াতে ইসলামী। বিপ্লবের পরেও আমরা উল্লাসে ফেটে পড়িনি। সবাইকে শান্ত থাকার নির্দেশ দিয়েছিলাম। দলের সর্বস্তরের নেতাকর্মীরা নির্দেশনা মেনে চলেছেন। দেশের কোনো প্রান্তের কোনো নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে অভিযোগ আসেনি।
জামায়াতের আমির ড. শফিকুর রহমান বলেন, যারা আমাদের ওপর ফ্যাসিবাদের থাবা বিস্তার করেছিল, একনাগাড়ে সাড়ে ১৫ বছর তাণ্ডব চালিয়েছিল, যারা মানুষকে খুন, গুম লুণ্ঠন করেছিল, যারা মানুষের ইজ্জত লুণ্ঠন করেছে, যারা বাংলাদেশের সম্পদ লুণ্ঠন করে বিদেশের মাঠিতে প্রসাদ তৈরি করেছেন; তাদের আমরা ক্ষমা করব না। তাদের প্রত্যেকের অপরাধের বিচার করতে হবে। তবে দল হিসেবে জামায়াতে ইসলামী সবচেয়ে মজলুম দল। এই দলের শীর্ষ নেতাদের বিচারের নামে হত্যা করা হয়েছে।
আওয়ামী লীগ জামায়াতকে নিষিদ্ধ করার প্রসঙ্গে টেনে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থেকে জামায়াতকে নিষিদ্ধ করেছিল। পরে জামায়াত ও ইসলামী ছাত্র শিবিরকে দেশে থেকে নির্মূল করতে চেয়েছিল। যারা আমাদেরকে নিষিদ্ধ করতে চেয়েছিল; সৃষ্টিকর্তা কার্যত এই জমিতে তাদের নিষিদ্ধ করে দিয়েছে। এতে আমাদের কোনো কৃতিত্ব নেই। সমস্ত কৃতিত্ব সৃষ্টিকর্তার। এই জন্য এই বিপ্লব, এই বিজয়ের পর আমরা কোনো উল্লাস করেনি। আমরা দেশবাসী, সহকর্মীকে বিশেষভাবে অনুরোধ করেছিলাম, আপনারা সৃষ্টিকর্তার জন্য সেজদাতে পড়ুন, চোখের পানি দিয়ে আল্লাহকে শুকরিয়া করুন। এ কারণে দেশের কোন প্রান্তে কোনো নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ উঠেনি।
পথসভায় উপস্থিত ছিলেন- জেলা জামায়াতের আমির অধ্যাপক গোলাম রসুল, সংগঠনের নেতা গোলাম কুদ্দুস, বেলাল হোসাইন, শাহাবুদ্দিন, শামসুজ্জামান, রেজাউল করিম প্রমুখ।
বক্তব্য শেষে সম্প্রতি যশোর শহরের খোলাডাঙ্গা বাজারে স্থানীয় সন্ত্রাসীদের হাতে নিহত জামায়াত কর্মী আমিনুর সজলের সন্তানকে বুকে টেনে নেন ডা. শফিকুর রহমান। এর আগে সন্ধ্যায় দলীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে সাতক্ষীরার উদ্দেশ্য রওনা দেন। এ সময় তিনি ঝিকরগাছা বাজার ও শার্শার নাভারণ মোড়েও পথসভায় অংশ নেওয়ার কথা রয়েছে।