
পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় দাবদাহে জনজীবন বিপর্যস্থ হয়ে পড়েছে। মাঠ-ঘাট-খাল-বিল শুঁকিয়ে চৌচির ও বিবর্ণ হয়ে গেছে। এলাকায় তীব্র পানি সংকট দেখা দিয়েছে। প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের কারণে বিরূপ প্রভাব পড়ছে কৃষিক্ষেত্রে।
এদিকে পর্যটন কেন্দ্র কুয়াকাটায় কিছু পর্যটক থাকলেও সূর্যের প্রচণ্ড তাপে পুরো সৈকত এখন জনশূন্য। এছাড়া উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে দেখা দিয়েছে ডায়রিয়াসহ পানিবাহিত রোগের প্রাদূর্ভাব। দিন রাত ঘন ঘন বিদ্যুতের লোডশেডিংয়ের ফাঁদে পরে শিক্ষার্থী ও পরীক্ষার্থীরা দিশেহারা।
সরেজমিনে দেখা গেছে, উপজেলার শতকরা ৮০টি খাল কিংবা ব্যক্তিগত পুকুর এখন পানিশুন্য হয়ে আছে। কোনো কোনো পুকুরের তলদেশে খানিকটা পানি থাকলেও তা এখন ব্যবহারের অনুপোযোগী হয়ে পড়েছে। দীর্ঘ খরা আর দাবদাহে এ জনপদের মানুষ এখন দিশেহারা। শ্রমজীব লোকজন প্রচণ্ড গরমে সামান্য স্বস্তি পেতে রাস্তার পাশের অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে তৈরি শরবত পান করছে। আবার কেউ কেউ গাছের ছায়ায় বিশ্রাম নিচ্ছেন। এ অঞ্চলে ৩৫ দশমিক ৮ ডিগ্রি তাপমাত্রা রয়েছে। এঅবস্থা আরো কিছুদিন চলতে পারে বলে কলাপাড়া আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা গেছে।
কৃষকদের সঙ্গে আলোচনা করে জানা গেছে, অনাবৃষ্টির কারণে মাঠঘাট ফেঁটে চৌচির হয়ে গেছে। পানি সংকটের কারণে ক্ষেতে পার্যাপ্ত সেচ দিতে পারছেনা। এর ফলে গাছের পাতা শুঁকিয়ে যাচ্ছে। নিত্যদিনের ব্যবহারের পানিও পর্যান্ত পরিমাণে পাওয়া যাচ্ছে না বলে ওই সব কৃষকরা জানান।
শনিবার (৩০ এপ্রিল) সকালে কলাপাড়া হাসপাতালে গিয়ে দেখা গেছে, ভর্তি হওয়া রোগীরা বৈদ্যুতিক পাখার বাতাসেও স্বস্তি পাচ্ছে না। প্রচণ্ড গরমে একটু স্বস্তির জন্য হাতপাখা চালিয়ে নিজেকে রক্ষার চেষ্টা করছে। গত এক সপ্তাহে ডায়রিয়ায় ও নিমোনিয়ায় আক্রান্ত অর্ধশতাধিক রোগী ভর্তি হয়েছে। এছাড়া শতাধিক রোগী বর্হিবিভাগে চিকিৎসা নিয়ে বাড়িতে চলে গেছে। এদের মধ্যে অধিকাংশই শিশু ও বৃদ্ধ।
রোগীরা জানান, ওষুধপত্র সব কিছুই হাসপাতালের বাহির থেকে কিনতে হচ্ছে। এছাড়া ডাক্তারা তেমন তদাকরি করেন না বলে ভুক্তভোগী রোগীরা অভিযোগ করেন।
হাসপাতালের আবাসিক মেডিকের অফিসার মো. রোফায়েত হোসেন জানান, প্রচণ্ড গরমে ডায়রিয়ায় আক্রন্ত রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। এজন্য আমরা যথাসাধ্য সেবা ও পরামর্শ দিচ্ছি।
উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডাক্তার আবদুল মন্নান জানান, বর্তমানে আমি স্টেশনে নেই। হাসপাতালে ওষুধ সরবরাহে কোনো সমস্যা নেই। মাঝে মাঝে দু-একটি ওষুধ বাহির থেকে কিনে আনতে হচ্ছে।