
আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফিরছেন কেভিন পিটারসেন, তাও আবার ইংল্যান্ডের জার্সিতে না দক্ষিণ আফ্রিকার জার্সিতে। এক দশক ধরে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলার পর এখন আবার অন্য দলের হয়ে খেলবেন পিটারসেন! অবাক হতেই পারেন। ভিন্ন দুই দেশের হয়ে খেলা ক্রিকেটার আছেন বেশ কজন। এমনকি টেস্টও দুই দেশের হয়ে খেলা ক্রিকেটারের খোঁজ মেলে। কিন্তু প্রায় দশ বছর ধরে এক দেশের হয়ে খেলে আরেক দেশের হয়ে অভিষেক বিরল তো বটেই। সেই সম্ভাবনার সামনে দাঁড়িয়ে পিটারসেন।
ক্যারিয়ারের শুরুতে নিজ জন্মভূমির বদলে ইংল্যান্ডকে বেছে নিয়েছিলেন পিটারসেন। ইংল্যান্ডকে সাফল্যও এনে দিয়েছেন অনেক। শুরুতেই ২০০৫ অ্যাশেজ থেকে বিশ্বমঞ্চে ইংল্যান্ডের প্রথম সাফল্য ২০১০ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ জয়েও ছিল প্রত্যক্ষ অবদান। কিন্তু শৃঙ্খলা ভঙ্গের কারণে সেই দলেই এখন ব্রাত্য হয়ে পড়েছেন পিটারসেন। ২০১৪ সালের পর থেকেই ইংল্যান্ডের হয়ে খেলতে পারছেন না। ইংল্যান্ডের টেস্ট দলে ফেরার ইচ্ছায় গত মৌসুমে আইপিএল খেলার ডাকও ফিরিয়ে দিয়েছিলেন। কিন্তু তাতেও কপাল ফেরেনি, বোর্ড পরিচালক অ্যান্ড্রু স্ট্রাউস সরাসরিই বলে দিয়েছেন, ইংল্যান্ড দলে আর সুযোগ পাবেন না কেপি।
এ জন্যই বোধ হয় পিটারসেন এবার নাড়ির টানে নীড়ে ফিরতে চাইছেন। চাইলেও অবশ্য এত সহজ হবে না সবকিছু। প্রথম ধাপ হিসেবে দক্ষিণ আফ্রিকার ঘরোয়া ক্রিকেটে পা দিয়েছেন। তবে দর্শকদের পাশাপাশি ফর্ম দিয়ে নির্বাচকদের মনও জিততে হবে। তা ছাড়া ২০১৮ সালের জানুয়ারির আগ পর্যন্ত অন্য কোনো দেশের হয়ে খেলতে পারবেন না নিয়মের কারণে। চার বছর বিরতি দিলেই কেবল ভিন্ন দেশের হয়ে খেলা যায়। ইংল্যান্ডের হয়ে ২০১৪ সালের জানুয়ারিতে সর্বশেষ খেলা কেপিকে তাই আরও অপেক্ষা করতে হবে।
পিটারসেনের কথা শুনে বোঝা যাচ্ছে, দক্ষিণ আফ্রিকার হয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফেরার সম্ভাবনা নিয়ে ভাবছেন। শুরুতে ‘মাথায় চিন্তাটি আছে। যদি হয় তাহলে ভালো, না হলেও ক্ষতি নেই’, ধরনের কথা বললেও এরপরই বের হয়ে এসেছে তাঁর মনের আসল কথা, ‘এটি এমন এক বিষয় (আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলা) যা অনেক দিন ধরেই করছি। আমি কি আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের অভাব বোধ করি? আন্তর্জাতিক পর্যায়ে ব্যাটিং করতে ইচ্ছে হয় আমার? অবশ্যই! তাই ভবিষ্যতে কী হবে তা বলা যাচ্ছে না!’
২০১৮ সালের জানুয়ারিতে ভিন্ন কোনো আন্তর্জাতিক দলের হয়ে খেলার যোগ্য হবেন। তত দিনে তাঁর বয়স হয়ে যাবে ৩৭। এই বয়সে আবার আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফিরতে পারবেন কি? সে জন্যই হয়তো এখনো ইংল্যান্ড দলের হয়ে খেলার আশা ছাড়ছেন না এই মারকুটে ব্যাটসম্যান, ‘দক্ষিণ আফ্রিকার হয়ে খেলার যোগ্যতা পেতে এখনো অনেক দেরি। তাই সবাইকে অপেক্ষা করতে হবে। তবে ইংল্যান্ডের হয়ে খেলার সুযোগ এখনো শেষ হয়ে যায়নি।’ সূত্র: ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া।