লক্ষ্মীপুরের কমলনগর উপজেলার হাজিরহাট ইউনিয়নের মুলুভীরটেক এলাকায় স্থানীয় জনগণ এক মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেন। এ কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করেন এলাকার বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার শতাধিক নারী-পুরুষ। তারা অভিযোগ করেন, স্থানীয় প্রভাবশালী পতিতালয়ের সর্দার জাহানারা ওরফে জাইন্না মেম্বার এলাকার সাধারণ মানুষকে ভয়ভীতি ও হয়রানির মাধ্যমে দীর্ঘদিন ধরে দমন করে আসছেন। সম্প্রতি তিনি নিজের অপকর্ম ঢাকতে ও নিরীহ মানুষদের চুপ করাতে সাজানো মামলা করেছেন বলে এলাকাবাসীর দাবি।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, এটি সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন ও সাজানো মামলা। নিরীহ ও সৎ মানুষদের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ এনে ভয় দেখিয়ে এলাকা নিয়ন্ত্রণে রাখার অপচেষ্টা চলছে।
তারা আরও অভিযোগ করেন, প্রায় দুই যুগ ধরে এই নারী পতিতাবৃত্তি, চাঁদাবাজি, ও নৈতিক অবক্ষয়ের মাধ্যমে এলাকার শান্তি-শৃঙ্খলা নষ্ট করে চলেছেন, অথচ প্রশাসন এখনো তাঁর বিরুদ্ধে কার্যকর কোনো ব্যবস্থা নেয়নি।
বক্তারা প্রশাসনের নিষ্ক্রিয়তার তীব্র সমালোচনা করে বলেন, একজন নারী প্রকাশ্যে অসামাজিক কর্মকাণ্ড চালিয়ে এলাকা অশান্ত করে তুলছেন, অথচ তাঁর বিরুদ্ধে কোনো আইনি পদক্ষেপ না নেওয়া সত্যিই দুঃখজনক ও লজ্জাজনক।
এদিকে গত রবিবার সকালে ক্ষুব্ধ হয়ে এলাকাবাসী পতিতা সর্দার জাইন্না মেম্বারের বাড়িতে গিয়ে পতিতালয় বন্ধ করে দেয়। এসময় এক তরুণীকে উদ্ধার করে পুলিশে সোপর্দ করা হয়। জাইন্না মেম্বার ও তার সহযোগীরা পিছনের দরজা দিয়ে পালিয়ে যায়।
পতিতালয় বন্ধের কয়েক ঘণ্টা পরে ওই বাড়ি রহস্যজনকভাবে আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে যায়। এলাকাবাসীর অভিযোগ, ঘটনাটি ছিল পরিকল্পিত। নিজেদের অপরাধ আড়াল ও নিরীহ মানুষকে ফাঁসানোর উদ্দেশ্যে জাইন্না মেম্বার নিজেই ঘটনাটি ঘটিয়েছেন।
এই ঘটনার তিন দিন পর জাহানারা বেগম ওরফে জাইন্না মেম্বার ১৯ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাত আরও ৩৫ জনকে আসামি করে আদালতে মামলা দায়ের করেন। স্থানীয়রা এটিকে সম্পূর্ণ সাজানো মামলা ও প্রতিশোধমূলক পদক্ষেপ বলে দাবি করছেন।
মামলার আসামি আজগর হোসেন বলেন, “আমি কিছুই জানি না, তবুও আমাকে ১ নম্বর আসামি বানানো হয়েছে। এটি নিছক ষড়যন্ত্র।”
আরেক অভিযুক্ত ইস্রাফিল হোসেন জানান, “ঘটনার সময় আমি করুণানগর বাজারে ছিলাম, ব্যক্তিগত শত্রুতার জেরে সাজানো সাক্ষী লম্বা ইসমাইল আমাদের পরিবারকে মামলায় জড়ায়।”
সচেতন মহল মনে করেন, এ ধরনের অনৈতিক কার্যকলাপের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানানো যদি যুব সমাজের জন্য মামলার ভয় ও হামলার আশঙ্কা বয়ে আনে, তাহলে ভবিষ্যতে কেউ আর অন্যায়ের বিরুদ্ধে দাঁড়াতে সাহস পাবে না। এতে সমাজে অন্যায়, অবিচার ও অনৈতিকতার বিস্তার আরও বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।