এগারো বছর পর বেসরকারি স্যাটেলাইট চ্যানেল দিগন্ত টেলিভিশনের সম্প্রচারের সাময়িক নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা হয়েছে
বৃহস্পতিবার ( ৮ আগস্ট) গণমাধ্যমটির নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়। মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বশীল একজন কর্মকর্তা সংবাদমাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
তিনি জানান, টেলিভিশন কর্তৃপক্ষের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে তা প্রত্যাহার করা হয়েছে।
এর আগে ২০১৩ সালে সত্য ও সুন্দরের পক্ষে সংবাদ পরিবেশন করতে গিয়ে শেখ হাসিনা সরকারের প্রতিহিংসায় মিথ্যে অভিযোগ এনে দিগন্ত টেলিভিশনের সম্প্রচার সাময়িক বন্ধ করে দিয়েছিল তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার।
সম্প্রতি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃত্বে গণ-অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকারের পতন ঘটে। একপর্যায়ে ক্ষমতা ছেড়ে দেশ ত্যাগ করেন শেখ হাসিনা। এর পরই বদলে যেতে শুরু করে দেশের সার্বিক চিত্র।
এরই অংশ হিসেবে গত ৬ আগস্ট দিগন্ত টেলিভিশন কার্যালয়ে প্রতিষ্ঠানটির সাবেক সব কর্মকর্তা জড়ো হন। নতুন করে চ্যানেলটি চালু করার বিষয়ে আলোচনা করতেই তারা একত্রিত হন।
দিগন্ত টেলিভিশনের সাথে জড়িত কয়েকজন সংবাদ কর্মীর সাথে আলাপ করে জানা গেছে, যোর করে দিগন্ত টেলিভিশনের সম্প্রচার বন্ধ করার পর টেলিভিশনটির সাথে জড়িত সকল সংবাদকর্মীকে বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা দিয়ে হয়রানী করা হয়েছে। তারা এই এগার বছর যাবৎ মানবেতর জীবন-যাপন করেছেন। অনেকেই আর্থিক দৈন্যতায় দিন কাটিয়ে কোনভাবে বেঁচে ছিলেন। আজ দিগন্ত টিভির সাময়িক নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করায় সকলের মুখে হাসি ফুঁটেছে। তবে, এতদিন যে ক্ষতি হয়েছে তা পুরণ হওয়ার নয় বলেও উল্লেখ করেন অনেকেই।
দিগন্ত টিভির ব্রডকাস্ট বিভাগের কয়েকজন জানান, সত্য বলার জন্য স্বৈরাচার আওয়ামী লীগ সরকার দিগন্ত টেলিভিশনের কন্ঠ রোধ করে দিয়েছিল। কিন্তু দ্বিতীয়বার বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ত্যাগের ফলে বাংলাদেশ আবারো স্বাধীনতা পেয়েছে। এই স্বাধীন দেশে এখন সকল শৃংখল মুক্ত হয়েছে। দিগন্ত আলোর মুখ দেখেছে। এজন্য বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সকলকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন দিগন্ত টেলিভিশন পরিবার। তবে, দিগন্ত টেলিভিশনের যন্ত্রাংশ ও দিগন্ত পরিবারের সকলের এগার বছরে যে ক্ষতি সাধন হয়েছে তার ক্ষতিপুরণ দাবি করেছেন সকলে।
উল্লেখ্য, ২০১৩ সালের স্থানীয় সময় ভোর ৪ টা ২০ মিনিটের দিকে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) স্বৈরাচার শেখ হাসিনা সরকারের নির্দেশে মিথ্যা অভিযোগ এনে চ্যানেলটি বন্ধ করে দেয়। দিগন্ত টেলিভিশনের প্রধান বার্তা সম্পাদক জিয়াউল কবির জানান, ভোর সোয়া চারটায় বিটিআরসির পরিচালক সাজ্জাদ হোসেনের নেতৃত্বে ১২ থেকে ১৫ জনের গোয়েন্দা পুলিশের দল এসে ‘সরকারি উচ্চপর্যায়ের’ বরাত দিয়ে টিভির সম্প্রচার সাময়িক বন্ধের নির্দেশ দেন।