মঙ্গলবার, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০২:২৫ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
ভারত বর্ষার সময় পানি ছেড়ে দিয়ে আমাদেরকে বন্যা উপহার দেয়: জামায়াতের আমির সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেকের বিরুদ্ধে বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলা একনেক, আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্তসহ ৪ উপদেষ্টা পরিষদ কমিটি গঠন সংঘর্ষে চরম মানবাধিকার লঙ্ঘন নিয়ে যা বললেন জাতিসংঘ প্রতিনিধিদলের প্রধান রাশেদ খান মেনন আটক বন্যার্তদের সাহায্যে এগিয়ে আসার আহ্বান জামায়াতের উদ্দেশ্য সচেতনভাবেই ডুম্বুর বাঁধের গেট খুলে দেওয়া হয়েছে: রিজভী উপদেষ্টারা সব বন্যা কবলিত এলাকা পরিদর্শন করবেন গণমাধ্যমে তারেক রহমানের বক্তব্য প্রচারে আইনগত বাধা নেই দেশের প্রায় ১৮ লাখ মানুষ পানিবন্দি, ১ কোটি ৪২ লাখ টাকা বরাদ্দ

সন্তানের মুখ দেখা হলো না রনির

সিএনআই নিউজ টুয়েন্টিফোর
  • আপডেট সময় : 11:25 am, বৃহস্পতিবার, ১ আগস্ট, ২০২৪

‘বউটা পোয়াতি। কত স্বপ্ন ছিল ছেলেটা বাপজান ডাক শুনবে। সন্তানকে ভালো স্কুলে পড়ায়া মানুষের মতো মানুষ করবে। আমার বুকের মানিকের এই স্বপ্ন আর পূরণ হইলো না।
সন্তানের মুখটা দেখা হইলো না। সবাইরে ছাইরা চইলা গেল আমার বুকের মানিক।’ বিলাপ করে বার বার কথাগুলো বলছিলেন আর মূর্ছা যাচ্ছিলেন মেরিনা বেগম।
মেরিনা বেগমের ছেলে আল-আমিন রনি (২৪) গত ১৯ জুলাই ঢাকার মহাখালীতে সরকারি চাকরিতে কোটাব্যবস্থার সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনের মধ্যে পড়ে গুলিবিদ্ধ হয়ে প্রাণ হারান।
গত ২০ জুলাই লাশ নিয়ে অন্য স্বজনের সঙ্গে বরিশালের বানারীপাড়া উপজেলার সলিয়াবাকপুর ইউনিয়নের পূর্ব বেতাল গ্রামের বাড়িতে আসেন মা মেরিনা বেগম। সেখানেই এই হৃদয় বিদারক দৃশ্যের দেখা মেলে।
আল-আমিন রনি মহাখালীর মাল্টিব্রান্ড ওয়ার্কশপে কাজ করতেন। করোনার সময় বাবা দুলাল হাওলাদার মারা গেছেন
অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী মিম, মা মেরিনা বেগম ও ছোট ভাই রহিমকে নিয়ে ঢাকার মহাখালী সাততলা বাউন্ডারি বস্তি এলাকায় বাস নিম্নবিত্ত এ পরিবারের। মেরিনার দুই ছেলের মধ্যে রনি বড়। তার আয়েই চলত সংসার।
স্বজনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, রনির আয় দিয়ে সংসার চলত চার সদস্যের পরিবারটির। ঘটনার দিন বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে মায়ের কাছ থেকে ১০০ টাকা নিয়ে মহাখালী সাততলা বাউন্ডারি বস্তি এলাকার বাসা থেকে বের হন রনি।
বিকেল ৫টার দিকে মহাখালী বাস স্ট্যান্ডে কোটা আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান তিনি। রাত ৮টার দিকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজে তার লাশ শনাক্ত করেন মা মেরিনা বেগম। ময়নাতদন্ত শেষে লাশ ২০ জুলাই উপজেলার সলিয়াবাকপুর ইউনিয়নের পূর্ব বেতাল গ্রামে আনা হয়। ওই দিন রাত ১টার দিকে জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে তার লাশ দাফন করা হয়।
স্থানীয়রা জানায়, রনি কোনো রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন না। তিনি পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি। তার আয়েই চলত সংসার। মাস শেষে কষ্টার্জিত উপার্জনের টাকা তিনি বিধবা মায়ের হাতে তুলে দিতেন। দাদিও তার ভরণপোষণ ও ওষুধপথ্যের জন্য নির্ভরশীল ছিলেন রনির ওপর। তার স্ত্রী ৬ মাসের অন্তঃসত্ত্বা। রনির অকাল মৃত্যুতে অনাগত সন্তানকে তিনি কীভাবে মানুষ করবেন তা নিয়ে চিন্তিত। একমাত্র উপার্জনক্ষম আদরের নাতিকে হারিয়ে কান্না থামছে না রনির দাদি শতবর্ষী মরিয়ম বেগমের।
বিলাপ করতে করতে মরিয়ম বেগম জানান, একে একে তার পাঁচ ছেলে মারা গেছে। নাতি রনিকে অবলম্বন করেই বেঁচে ছিলেন। এই মৃত্যু সইবেন কেমন করে।
স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মাস্টার সিদ্দিকুর রহমান জানান, রনির আয়ে চলত তাদের সংসার। তাকে হারিয়ে পরিবারটি এখন দিশেহারা। পরিষদের পক্ষ থেকে সব ধরনের সহায়তা করা হবে অসহায় এ পরিবারটিকে।

সংবাদটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

এই রকম আরো জনপ্রিয় সংবাদ
© All rights reserved © 2017 Cninews24.Com
Design & Development BY Hostitbd.Com