কোটা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকে কেন্দ্র করে চাঁদপুরের হাজীগঞ্জে সংঘর্ষ, হামলা, ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় পুলিশ চারটি মামলা করেছে। এই মামলায় নামীয় আসামি করা হয়েছে ১৭৮ জনকে। বিশেষ ক্ষমতা আইন (১৯৭৪), বিস্ফোরক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন, পুলিশ ও সাধারণ জনগনকে হত্যা চেষ্টা আইনে দায়ের করা মামলায় সব মিলিয়ে রবিবার (২৮ জুলাই) দিবাগত পর্যন্ত ২৮ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তাদের সবাইকে আদালতের মাধ্যমে জেলে প্রেরন করা হয়েছে।
তারা সবাই বিএনপি জামায়াতের নেতাকর্মী। এর মধ্যে উপজেলা জামায়াতের সাবেক আমির ও উচ্চগাঁ দাখিল মাদ্রাসা সুপার শাহ পরান মজুমদারকে চার দিনের রিমান্ডে এনেছে থানা পুলিশ।
পুলিশ জানায়, হাজীগঞ্জের টোরাগড়, এনায়েতপুর ও কাজিরগাঁওয়ে সংঘর্ষ, হামলা, ভাংচুর ও গাড়িতে অগ্নিসংযোগের ঘটনায় পুলিশ চারটি মামলা (নং- ১৫, ১৬, ১৭ ও ১৮) করে। মামলায় নামীয় ১৭৮ জনসহ অজ্ঞাত অনেককে আসামি করা হয়েছে।
এর মধ্যে অধিকাংশ আসামিই বিএনপি-জামাতের নেতাকর্মী ও সমর্থক। এর মধ্যে ২০ জুলাই আটকরা নামীয় আসামি উপজেলা জামায়াতের সাবেক আমির শাহ পরান মজুদারকে আটক করে আদালতের মাধ্যমে জেলে পাঠানো হয়। সোমবার (২৯ জুলাই) হাজীগঞ্জ থানা পুলিশ তাকে চার দিনের রিমান্ডে আনে।
চারটি মামলার মধ্যে ১৮ জুলাই (বৃহস্পতিবার) টোরাগড়ে সংঘর্ষ, হামলা ও ভাংচুরের ঘটনায় নামীয় ৫১ জন, ১৯ জুলাই (শুক্রবার) এনায়েতপুরে সংঘর্ষ, হামলা ও ভাংচুরের ঘটনায় নামীয় ৫৩ জন এবং একই দিনে টোরাগড়ে সংঘর্ষ, হামলা, ভাংচুর, সড়ক ও একটি পিকআপে অগ্নিসংযোগের ঘটনায় নামীয় ৫৬ জনকে আসামি করা হয়েছে।
এই তিনটি মামলায় অজ্ঞাত অনেককেই আসামি করা হয়।
এ ছাড়াও শুক্রবার (১৯ জুলাই) রাতে লক্ষীপুর হাজীগঞ্জ কচুয়া গৌরীপুর সড়কের হাজীগঞ্জের মকিমাবাদ ও কাজিরগাঁও গ্রামের সংযোগস্থল চাঁদপুর-লাকসাম রেলসড়কের ক্রসিং এলাকায় সিমেন্টবাহী একটি কার্ভাডভ্যানে পেট্টোল বোমা নিক্ষেপ করে দুর্বৃত্তরা। এই ঘটনায় ১৮ জনকে নামীয় ও অজ্ঞাত ২০-২৫ জনকে আসামি করা হয়। এতে ট্রাকের হেলপার আব্দুল মজিদ (২৮) দগ্ধ হয়ে ২৫ জুলাই বৃহস্পতিবার রাতে মারা যান।
জামায়াত নেতার রিমান্ডের বিষয়টি নিশ্চিত করে হাজীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ আবদুর রশিদ জানান, তিন চিকিৎসকসহ গোপন বৈঠক করে সহিংসতায় মদদ দেওয়ার দায়ে শাহপরানকে রিমান্ডে আনা হয়েছে।
সহিসংতার ঘটনার সঙ্গে যাদের সংশ্লিষ্টতা রয়েছে, পুলিশ তাদেরকে গ্রেপ্তার করছে। হামলা, ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সবাইকে আইনের আওতায় নিয়ে আসা হবে।