রবিবার, ১৯ মে ২০২৪, ১২:৩৪ পূর্বাহ্ন

রাসুল (সা.) মুমিনকে যেসব বস্তুর সঙ্গে তুলনা দিয়েছেন

সিএনআই নিউজ টুয়েন্টিফোর
  • আপডেট সময় : 11:50 am, রবিবার, ৫ মে, ২০২৪

তাওহিদ (একত্ববাদ), রিসালাত (নবী-রাসুলের আগমন) ও আখিরাতে (পরকাল) বিশ্বাসীকে মুমিন বলা হয়। পবিত্র কোরআন-হাদিসে মুমিনের পরিচয় ও নানা বৈশিষ্ট্য বিস্তারিত বর্ণিত হয়েছে। রাসুলুল্লাহ (সা.) বিভিন্ন সময়ে মুমিনের বৈশিষ্ট্য ও স্বভাব চিত্রিত করেছেন। নিচে মুমিনদের স্বভাব, চরিত্র ও বৈশিষ্ট্য বিষয়ে কিছু হাদিস তুলে ধরা হলো—
সবুজ বৃক্ষের মতো: আবদুল্লাহ ইবনে ওমর (রা.) থেকে বর্ণিত, নবী (সা.) বলেছেন, ‘মুমিনের উপমা হলো এমন একটি সবুজ বৃক্ষের মতো, যার পাতা ঝরে পড়ে না এবং মলিন হয় না।
তখন কেউ বলল, এটি অমুক অমুক গাছ। তখন আমি বলতে চেয়েছিলাম যে এটি খেজুরগাছ। তবে আমি অল্প বয়সী হওয়ায় বড়দের সামনে বলতে সংকোচ বোধ করলাম। তখন নবী (সা.) বলে দিলেন যে, সেটি হলো খেজুরগাছ।
অতঃপর ওমর (রা.) বলেন, তুমি যদি এটি সবার সামনে বলতে, তবে তা এত এত ধনসম্পদ থেকেও আমার জন্য বেশি খুশির কারণ হতো।’ (সহিহ বুখারি, হাদিস : ৬১২২ )
নরম চারাগাছের মতো: আবু হুরাইরা (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘মুমিন ব্যক্তির দৃষ্টান্ত হলো, শস্যক্ষেতের নরম চারাগাছের মতো। যেকোনো দিক থেকেই তার দিকে বাতাস এলে বাতাস তাকে নুইয়ে দেয়। আবার যখন বাতাসের প্রবাহ বন্ধ হয় তখন তা সোজা হয়ে দাঁড়ায়।
বালা মুসিবত মুমিনকে নোয়াতে থাকে। আর পাপাচারী হলো শক্ত ভূমির ওপর শক্তভাবে সোজা হয়ে দাঁড়ানো গাছের মতো, যাকে আল্লাহ যখন ইচ্ছা করেন ভেঙে দেন। (সহিহ বুখারি, হাদিস : ৫৬৪৪)

সুখ-দুঃখ সব কল্যাণকর: সুহায়ব (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘মুমিনের অবস্থা বিস্ময়কর। সব কাজ তার জন্য কল্যাণকর। মুমিন ছাড়া অন্য কেউ এ বৈশিষ্ট্য লাভ করতে পারে না।
তারা সুখ-শান্তি লাভ করলে শোকর গুজার করে আর অসচ্ছলতা বা দুঃখ-মুসিবতে আক্রান্ত হলে সবর করে, প্রত্যেকটাই তার জন্য কল্যাণকর।’ (সহিহ মুসলিম, হাদিস : ২৯৯৯)
এক গর্তে দুইবার পড়ে না: আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, নবী (সা.) বলেছেন, প্রকৃত মুমিন একই গর্ত থেকে দুইবার দংশিত হয় না। (বুখারি, হাদিস : ৬১৩৩)
সরল ও ভদ্র হয়: আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, মুমিন ব্যক্তি সরল ও ভদ্র প্রকৃতির হয়ে থাকে, কিন্তু পাপিষ্ঠ ব্যক্তি ধোঁকাবাজ ও নির্লজ্জ হয়। (আবু দাউদ, হাদিস : ৪৭৯০)
মহৎ চিন্তার অধিকারী: আনাস ইবনে মালেক (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, যে মুমিন ব্যক্তি যুগপৎ দুনিয়ার ব্যাপারেও চিন্তা করে এবং আখিরাতের ব্যাপারেও চিন্তা করে সে মহৎ চিন্তার অধিকারী। (ইবনে মাজাহ, হাদিস : ২১৪৩)
সব মুমিন এক দেহের মতো: নুমান ইবনে বাশির (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘মুমিনদের দেখবে পরস্পরের প্রতি মমতা, হৃদ্যতা ও দয়ার্দ্রতায় এক দেহের মতো। দেহের একটি অঙ্গ পীড়িত হলে গোটা দেহ অনিদ্রা ও জরাক্রান্ত হওয়ার মাধ্যমে তার প্রতি একাত্মতা প্রকাশ করে।’ (সহিহ বুখারি, হাদিস : ৬০১১)
একে অন্যের জন্য আয়নাস্বরূপ: আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘মুমিন মুমিনের জন্য আয়না, (তার কোনো ত্রুটি দেখলে সে তা সংশোধন করে দেয়)। আর এক মুমিন অন্য মুমিনের ভাই, সে তার ভাইয়ের জমিজমা সুরক্ষা দেয় এবং তার ভাইকে তার পেছন থেকে আগলে রাখে।’ (আবু দাউদ, হাদিস : ৪৯১৮)
সবাই তার কাছ থেকে নিরাপদ থাকে: আনাস (রা.) থেকে বর্ণিত, নবী (সা.) বলেছেন, ‘প্রকৃত মুমিন সে-ই, যার থেকে মানুষ (সব দিক থেকে) নিশ্চিন্ত থাকে, মুসলিম সে-ই যার জিহ্বা ও হাত থেকে মুসলমানরা নিরাপদ থাকে।’ (মুসনাদে আহমদ, হাদিস : ১৬৫৬১)
উত্তম চরিত্রের অধিকারী: আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ঈমানের দিক থেকে মুমিনদের মধ্যে সবচেয়ে পূর্ণাঙ্গ ওই ব্যক্তি, যে সবচেয়ে সুন্দর চরিত্রের অধিকারী। (আবু দাউদ, হাদিস : ৪৬৮২)

সংবাদটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

এই রকম আরো জনপ্রিয় সংবাদ
© All rights reserved © 2017 Cninews24.Com
Design & Development BY Hostitbd.Com