খুলনার পাইকগাছায় সর্বত্রই ভেজাল-মানহীন ও মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধে সয়লাব। এসব ওষুধ খেয়ে মানুষ উপকারের চেয়ে ক্ষতির দিকে ধাবিত হচ্ছে। উপজেলা সদরের চেয়ে গ্রামাঞ্চলের দোকানগুলোতে এমনকি মুদি দোকানেও এসব ওষুধ বিক্রি হয়। সচেতন মহল মনে করে, মানুষের জীবন-মরণের মাঝখানে একশ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ী ভেজাল, মানহীন ওষুধ তৈরি করে ওষুধ বিক্রেতাদের বেশি লোভ দেখিয়ে, ভুল বুঝিয়ে বিক্রি করতে বাধ্য করছে। বিশেষ করে গ্রামাঞ্চলের দোকানগুলোতে ডাক্তারে ব্যবস্থাপত্র ছাড়া এসব ওষুধ বেশি বিক্রি হয়। ওধুষের কভার (মোড়ক) দেখে বোঝার কোনো উপায় থাকে না। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে লোকজন ডাক্তার দেখিয়ে প্রেসক্রিপশন করাতে চায় না। এ সুযোগটাই লুফে নেয় অসাধু ব্যবসায়ীরা। উপজেলার কাঁটিপাড়া বাজারের ওষুধ ব্যবসায়ী মোছাব্বির আহমেদ জানান, নামিদামি কোম্পানির ওষুধের আদলে বহু ভুঁইফোঁড় কোম্পানি ওষুধ তৈরি করে। ওধুষের কভার দেখে আসল না নকল বোঝার কোনো উপায় থাকে না। গ্রামের অনেক ওষুধ ব্যবসায়ী এ ব্যবধান না বুঝেই ওষুধ বিক্রি করেন। চাঁদখালী বাজারের ঔষধ ব্যবসায়ী হাফিজুর রহমান একটি নামিদামি কোম্পানির ওষুধ দেখিয়ে বলেন, এটা আগে বিক্রি করতাম ১৫ টাকায়, বর্তমানে এটি ৩৫ টাকা। আগে এক ফাইল ওষুধ খেলে কাজ হতো, এখন তিন ফাইলেও কোনো কাজ হয় না। এছাড়া ভুঁইফোঁড় কোম্পানির ওষুধ প্রায় প্রতিটি দোকানেই রয়েছে। তিনি পরামর্শ দিয়ে বলেন, এ ব্যাপারে গোড়া থেকেই ব্যবস্থা নিতে হবে। কিন্তু ব্যবস্থা নেবে কে! পৌরসভার সরল গ্রামের ভ্যানচালক ইমন হোসেন বলেন, তার ছেলের জ্বর ও কাঁশি হয়েছে। ডাক্তার দেখিয়ে ঔষধ খাইয়েছি, কিন্তু কোন কাজ হচ্ছে না। হয়তো ছেলেকে খুলনায় নিতে হবে। একই কথা বললেন গোপালপুর গ্রামের সাঈদ গাজীর। পাইকগাছা উপজেলা নির্বাহী অফিসার মুহাম্মদ আল-আমিন বলেন, আমরা নিয়মিত বাজার মনিটরিং করছি। বাজারে মেয়াদোত্তীর্ণ অবৈধ ও নিষিদ্ধ ঔষধ রাখা ও বিক্রি ধরতে পারলে জরিমানা করা হবে। তিনি আরও বলেন, অভিযান অব্যাহত থাকবে।