হবিগঞ্জের বাহুবল উপজেলার কামারগাঁও গ্রামে জায়গা সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে দু’পক্ষের লোকজনের মধ্যে ভয়াবহ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে উভয়পক্ষের দুজন নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরো ১০ জন। তাদেরকে উদ্ধার করে সিলেট ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ ও হবিগঞ্জ জেলা সদর আধুনিক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
শনিবার (৩০ সেপ্টেম্বর) রাত ১০টায় এ ঘটনা ঘটে।
নিহতরা হলেন- ওই গ্রামের চেরাগ মহালদারের ছেলে বাহুবল উপজেলা যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ইউসুফ মিয়া (৪০) ও হাছন আলীর ছেলে উস্তার মিয়া (৪২)। এদিকে, সংঘর্ষের ঘটনাকে কেন্দ্র করে রাত ১২টার দিকে উভয় পক্ষের বাড়িতে অগ্নিসংযোগ ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে।
স্থানীয়রা জানান, জায়গার সীমানা নির্ধারণ নিয়ে কামারগাঁও গ্রামের আব্রু মিয়ার ছেলে ফারুক মিয়া ও তার লোকজনের সাথে দীর্ঘদিন ধরে একই গ্রামের চেরাগ মহালদারের ছেলে ইউসুফ গংদের বিরোধ চলে আসছিল।
এ নিয়ে মাস খানেক আগে উভয়পক্ষের মধ্যে মারামারির ঘটনা ঘটে। এতে ইউসুফ মিয়া ও তার ভাই লিয়াকত আলীর বিরুদ্ধে ফারুক মিয়ার পক্ষ থেকে মামলা দায়ের করা হয়। এ মামলায় গত ২১ সেপ্টেম্বর হবিগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ আদালত থেকে তারা জামিন জামিন লাভ করেন। এরপর থেকে উভয়পক্ষে উত্তেজনা দেখা দেয়।
দুই দিন আগেও তাদের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টাধাওয়ার ঘটনা ঘটে।
শনিবার সন্ধ্যায় বাহুবল উপজেলার চেরাগ আলী ফিলিং স্টেশন এলাকায় পুনরায় উভয়পক্ষের লোকজনের মধ্যে সংঘর্ষ বাঁধে। পরে বিষয়টির জের ধরে রাত ১০টায় ইউসুফ মিয়া ও উস্তার মিয়াসহ তাদের লোকজন দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে ভয়াবহ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। সংঘর্ষে আহত ইউসুফ মিয়া, উস্তার মিয়া, আতাউর মিয়া, সোলেয়মান আহমেদ, হাছন আলী, শহীদ মিয়া ও কালা মকসুদসহ ১০ জনকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় সিলেট ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল ও হবিগঞ্জ ২৫০ শয্যা আধুনিক জেলা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক ইউসুফ মিয়া ও উস্তার মিয়াকে মৃত ঘোষণা করেন। আহতদের হাসপাতালে নেওয়ার পর সেখানেও দুই পক্ষের লোকজনের মধ্যে মারামারি হয়।
পরে হবিগঞ্জের পুলিশ সুপার (এসপি) এসএম মুরাদ আলিসহ পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা সেখানে যান।
রাতে এ খবর এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে উভয়পক্ষের লোকজন একে অপরের বাড়িতে হামলা, ভাঙচুর ও ব্যাপক অগ্নিসংযোগ করে। ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের কয়েকটি স্থাপনায় অগ্নিসংযোগ করলে রাতে বেশ কিছু সময়ের জন্য যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
হবিগঞ্জ সহকারী পুলিশ সুপার (বাহুবল সার্কেল) আবুল খয়ের জানান, সংঘর্ষের ঘটনায় দুজন নিহত হয়েছেন। তাদের লাশ উদ্ধার করে হবিগঞ্জ ২৫০ শয্যা আধুনিক জেলা সদর হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।