নতুন আয়কর আইনে ফ্রিল্যান্সারদের রেমিটেন্স বা বৈদেশিক আয়ের বিপরীতে ১০ শতাংশ উৎস কর কর্তনের বিধান রাখা হয়েছে। সেই বিধান পরিপালনের জন্য ২৭ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশ ব্যাংক বৈদেশিক মুদ্রা নীতি বিভাগ সার্কুলার জারি করে কড়া নির্দেশনা দিয়েছে। এই নির্দেশরা জারির আগে এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংককে অবহিত করে চিঠি দিয়েছিল জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) অধীন কর অঞ্চল-১১।
এই চিঠিতে বলা হয়, আয়কর আইনের ১২৪ ধারায় উৎসে কর কেটে নির্ধারিত কোডের অনুকূলে জমা দেওয়ার অনুরোধ করা হলো।
নির্ধারিত কোডে জমা করতে ব্যর্থ হলে আয়কর আইনের ১৪৩ ধারা অনুযায়ী আইনানুগ কার্যক্রম গ্রহণের বাধ্যবাধকতা রয়েছে।
আয়কর আইন অনুযায়ী- ফি, সেবা চার্জ বা পারিশ্রমিক বা প্রকৃতির রেভিনিউ শেয়ারিংয়ের মাধ্যমে কাজের বিনিময়ে বিদেশ থেতে পাঠানো অর্থ কোনো ব্যক্তির হিসাবে পরিশোধ বা জমা প্রদানের জন্য দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তি প্রাপকের হিসাবে অর্থ পরিশোধ বা জমা প্রদানকালে উক্ত পরিশোধিত বা জমাকৃত অর্থের উপর ১০ শতাংশ হারে কর কর্তন করবেন। এর মধ্যে আছে- বাংলাদেশে প্রদত্ত কোনো সেবা, কোনো বিদেশি ব্যক্তিকে পরিষেবা প্রদান এবং বিজ্ঞাপন বা অন্য কোনো উদ্দেশ্যে কোনো অনলাইন প্লাটফর্ম ব্যবহারের অনুমতি প্রদান।
এই নির্দেশনা জারির পরই ব্যাপক প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে।
ফ্রিল্যান্সারদের অনেকেই বলছেন, এটি অগ্রহণযোগ্য। এর ফলে বৈধ পথে বৈদেশিক মুদ্রা আসার রাস্তাও বন্ধ হয়ে যাবে বলে অশঙ্কা করছেন অনেকে। কোনো কোনো ফ্রিল্যান্সার বলছেন, সরকার আমাদের কী সেবা দিচ্ছে যে, আয়ের ওপর ১০ শতাংশ কর ধার্য করবে। নাম প্রকাশে অনেচ্ছুক এক ফ্রিল্যান্সার জানিয়েছেন, কাজের সুবিধার জন্য ফ্রিল্যান্সাররা প্রায়ই বিভিন্ন বিদেশি ওয়েব টুল, সফটওয়্যার, সেবা কেনেন।
এসব সেবা কিনতে বা নিতে গেলে ৩০ শতাংশ ভ্যাট দিতে হয় সরকারকে, যা খুবই অস্বাভাবিক। কোনো সেবার প্রচারের জন্য বিজ্ঞাপন দেওয়ার ক্ষেত্রেও তা-ই। এছাড়া বিদ্যুতের সমস্যা তো আছেই, এর কারণে অনেকের আয় কমে গেছে। এতো কিছুর পর এই করারোপ কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।
বর্তমানে ফিল্যান্সিং বা মুক্ত পেশা খাতে কাজ করছেন ১০ লাখেরও বেশি তরুণ।