দাদন ও সুদ ব্যবসায়ীদের বেঁড়াজালে বন্দি বরেন্দ্রঞ্চলের কৃষকসহ নিম্মবিত্ত পরিবারগুলো। ওইসব সুদাকারবারী ব্যবসায়ীদের খপ্পর থেকে কিছুতেই বেড় হতে পারছেন না অসহায় অভাবী মানুষগুলো। তাদের চক্রবৃদ্ধি ঋণের বেঁড়াজালে ওইসব অভাবী মানুষগুলো ভিটে মাটি হারলেও পরিত্রাণ পাচ্ছে না বরং যেতে হচ্ছে জেল হাজতে। দেখার বা বলার কেউ নেই। কে শুনবে বা কে দাঁড়াবে ওইসব অভাবী অসহায় মানুষের পাশে। সূত্রমতে জানাযায়,অধিক মুনাফা ও লক্ষপতি হওয়ার আশায় ঝুকে পরেছে দাদন/সুদ ব্যবসায় এক শ্রেণীর অর্থলোভী মানুষ, প্রভাষক,শিক্ষক,চাতাল ব্যবসায়ী,স্বর্ণ ব্যবসায়ী,নামধারী রাজনীতির সাথে জরিত এক শ্রেণীর সুবিধাবাদী দ্বিগুন হারে বিভিন্ন পেশাজীবি অভাবী পরিবারের মধ্যে এই দাদন/সুদ ব্যবসায়া চালিয়ে যাচ্ছে। সুদ বা দাদন ব্যবসা সম্পর্কে জানে না এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া ভার। আঠারো শতকে দাদন ব্যবসা কোম্পানি নিযুক্ত দালালদের মাধ্যমে পরিচালিত হলেও পরে ১৭৫৩ সালে তা রহিত করা হয়। অতীতে কোম্পানির স্বার্থে শুরু হওয়া দাদন ব্যবসা একুশ শতকের বর্তমান বাংলাদেশে শুধু ব্যাপক আকারই ধারণ করেনি, বরং সমাজের রন্ধ্রে রন্ধ্রে পৌঁছে গেছে এর আগ্রাসী রূপ। দাদন প্রথা সংস্কার হয়ে বর্তমানে পর্যবসিত হয়েছে সুদের ব্যবসায়। আগে বিত্তবানেরা এ ব্যবসা করলেও এখন ঝুঁকে পড়েছে চতুরবাজ মধ্যবিত্তরাও। বিনা লোকসানে রাতারাতি কোটিপতি হতে অভাবী ও নিম্মবিত্ত মানুষকে চডা সুদে টাকা দিচ্ছে ওইসব দাদন ব্যবসায়ীরা। সাধারণের কাছে এরা সুদারু নামেই পরিচিত। বেশিরভাগ দাদন ব্যবসায়ী সুদে টাকা দেওয়ার আগে গ্রহীতার কাছ থেকে সাদা স্ট্যাম্পে সই নেয়। শুধু তাই নয়, গরিব মানুষকে ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খুলতে বাধ্য করে। ব্যাংকের ফাঁকা চেকে সই নিয়ে নিজের জিম্মায় নিয়ে নেয় ওইসব দাদন ব্যবসায়ী তথা সুদখোররা। সুদে টাকা নিয়ে নির্ধারিত সময়ে সুদের টাকা দিতে ব্যর্থ হলেই গ্রহীতার ওপর চালানো হয় মানসিক ও অনেক ক্ষেত্রে শারীরিক নির্যাতন। গালাগালিও করা হয় অশ্লীল ভাষায়। কোনো ক্ষেত্রে দু’এক মাস সুদের টাকা দিতে না পারলে সুদের সুদ টেনে হিসাব পাকাপোক্ত করে গ্রহীতার ওপর চাপ সৃষ্টি করেন সুদারুরা। তাদের কাছে গচ্ছিত ব্যাংকের চেক ও ফাঁকা স্ট্যাম্পে সই থাকায় প্রতিবাদও করতে পারে না ওইসব দরিদ্র অভাবী মানুষগুলো। অনেক ক্ষেত্রে দেখা গেছে, গ্রহীতারা সুদের টাকা দিতে না পারলে ব্যাংক চেকে ইচ্ছে মতো টাকার অঙ্ক বসিয়ে ব্যাংকে জমা দিয়ে ডিজওনার করে চেক জালিয়াতির মামলায় কারাবাস হয় সুদ গ্রহীতার। ওইসব দাদন/সুদারুদের রসানলে পড়ে হাজারো নির্যাতিত মানুষের জীবন চিত্র ফুটে উঠেছে এ,জেলায়। কেউ ঘরছাড়া,কেউ এলাকা ছাড়া,কেউ ঢাকা শহরে রিস্কাভ্যাান চালক,কেউবা বিভিন্ন কোম্পানিতে অল্প বেতনে চাকুরী নিয়ে বেঁচে আছেন। সুদের কার্যক্রম পরিচালনা করতে সুদারুরা তৈরি করেছে গ্যাং। সুদারুরা সংঘবদ্ধ হয়ে চালিয়ে যাচ্ছে এ ব্যবসা। অনেক ক্ষেত্রে স্থানীয় সন্ত্রাসীদের ভাড়াও করে দেওয়া হয় হুমকি। সুদ প্রথার ওপর সব ধর্মীয় আইনে নিষেধাজ্ঞা থাকলেও তা মানতে নারাজ সুদারুরা। সুদখোরদের কর্মকান্ড বন্ধ করতে পারছে সমাজের অসহায় মানুষ। সুত্রমতে জানাযায়, ওইসব দাদন/সুদব্যবসায়ীরা রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় এবং থানাপুলিশের সহায়তায় চালিয়ে যাচ্ছে রমরমা সুদের ব্যবসা। সুদের জন্য মানুষ মরছে, খুন হচ্ছে, মারধরের শিকার হচ্ছে। সচেতনদের দাবী,রাতারাতি বড় লোক হওয়ার লালসায় লিপ্ত ওইসব সুদখোরদের রুখতে সরকারের কাছে দাবি সুদ প্রতিরোধ করে সাধারণ মানুষকে বাঁচানোর।