স্টাফ রিপোর্টার
করোনা আক্রান্ত হয়ে রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। হঠাৎ শ্বাসকষ্ট বেড়ে যাওয়ায় সোমবার (৩ এপ্রিল) বিকেলে তাকে স্থানান্তর করা হয় হাসপাতালের সিসিইউতে। এরপর থেকেই তাকে উন্নত চিকিৎসা দিতে দেশের বাইরে নেয়ার বিষয় নিয়ে নানা মহলে শুরু হয় গুঞ্জন।
ওইদিন রাতে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে ফোন দিয়ে খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে অবগত করেন। ফোনালাপের পরপরই শুরু হয় গুঞ্জন। বিএনপি মহাসচিব অথবা খালেদা জিয়ার পরিবারের পক্ষ থেকে সরকারের কাছে উন্নত চিকিৎসার জন্য দেশের বাইরে নেয়ার আবেদন করা হয়েছে। অপেক্ষা সরকারের অনুমতির।
এ বিষয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল সময় সংবাদকে জানান, করোনা আক্রান্ত বেগম খালেদা জিয়াকে চিকিৎসার জন্য বিদেশে নিতে তার পরিবার কোনও আবেদন করেনি।
গত ২৭ এপ্রিল রাতে খালেদা জিয়াকে রাজধানীর এভার কেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। পরদিন বিএনপি প্রধানের চিকিৎসার জন্য ১০ সদস্যের মেডিকেল বোর্ড গঠন করা হয়। চিকিৎসকরা জানান, বোর্ডের হাতে এসেছে গত ৭ দিন যাবত বেগম জিয়ার শারীরিক পরীক্ষার সব রিপোর্ট।
এদিকে বিএনপি নেত্রীর ব্যক্তিগত চিকিৎসক এ জেড এম জাহিদ জানান, খালেদা জিয়ার পরিবারের পক্ষ থেকে অনেক আগে থেকে বিদেশে চিকিৎসা নেওয়ার জন্য বলা হচ্ছে। এখন নতুন প্রেক্ষাপট আর সারা পৃথিবীজুড়ে করোনা মহামারির এই বাস্তবতায় বিষয়টি আরও প্রাসঙ্গিক হয়ে পড়েছে।
যদিও খালেদা জিয়াকে কোন দেশে নিয়ে যাওয়া হবে, এ নিয়ে কেউই মন্তব্য করতে রাজি নন। তবে তার ছেলে তারেক রহমান ও প্রয়াত আরাফাত রহমান কোকোর পরিবার লন্ডনে থাকায় সেখানে নেওয়ার বিষয়টিই বেশি আলোচনায়। তবে অবস্থা জটিল হলে সিঙ্গাপুর বা ব্যাংককেও নেওয়ার বিষয়েও গুঞ্জন রয়েছে বিভিন্ন মহলে।
দলীয় সূত্র জানায়, এপ্রিলের মাঝামাঝি সময়ে আবেদনের পর কোনও অগ্রগতি না হওয়ায় সোমবার বিএনপির মহাসচিব স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেন। বিশেষ করে, সোমবার বিকেলে খালেদা জিয়াকে শ্বাসকষ্টজনিত কারণে এভার কেয়ার হাসপাতালের সিসিইউতে স্থানান্তর করার বিষয়টি অবহিত করেন। তবে পরিবার বা দলের পক্ষ থেকে খালেদা জিয়ার দেশে বাইরে নেয়ার বিষয়ে আবেদন করা হয়নি বলে জানান বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
এদিকে আজকের এক আলোচনা সভায় বিএনপি মহাসচিব জানান, খালেদা জিয়ার শ্বাসকষ্ট বাড়ায় তাকে অক্সিজেন দেয়া হচ্ছে।
এর আগে, গত ১১ এপ্রিল খালেদা জিয়ার করোনা টেস্টের রিপোর্ট পজিটিভ আসার বিষয়টি ওইদিন বিকেলে নিশ্চিত করেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
সর্বশেষ ২০১৭ সালের ১৬ জুলাই চিকিৎসার জন্য লন্ডন যান বিএনপি চেয়ারপারসন। সেখান থেকে এক মাসের মধ্যেই ফেরার কথা থাকলেও চিকিৎসায় সময় লাগায় হওয়ায় দেশে ফিরতে দেরি হয়। ওই বছর ১৮ অক্টোবর দেশে ফেরেন খালেদা জিয়া।