টি এম কামাল : সিরাজগঞ্জের কাজিপুর উপজেলা সদর থেকে দক্ষিণ পূর্ব দিকে বন্যানিয়ন্ত্রণ বাঁধ ধরে দশ কিলোমিটার এগোলে শুভগাছা গ্রাম। বন্যানিয়ন্ত্রণ বাঁধের দুই পাশে গ্রাম। শনিবার দুপুর ১২টায় সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, গ্রামের প্রায় বাড়িঘরে বন্যার পানি ছুঁই ছুঁই করছে। গ্রামের পাশে ফসলের ক্ষেত এখন এক রকম দরিয়া। সেই দরিয়ায় দাঁড়িয়ে কৃষক কেরামত আলী তাঁর ডুবে যাওয়া পাটক্ষেত দেখছেন। সবুজ পাতার কোনো চিহ্ন নেই। পাটক্ষেতের ওপর পানি আর পানি। কেরামত আলীর দুই চোখ দিয়ে গড়িয়ে পড়ছে অশ্রু। কেরামত আলীর মতো গ্রামের অন্য কৃষকেরও চোখ দিয়ে অশ্রুই ঝঁরছে। শুভগাছা ছেড়ে সামনে এগালেই বীরশুভগাছা গ্রাম। ভ্যানগাড়ি রেখে সামনে এগালে দেখা হয় গৃহবধু রোজিনা বেগমের সঙ্গে। তিনি বাড়ির জিনিসপত্র গোছাচ্ছেন। পানির ভয়ে নিরাপদ আশ্রয়ে যাওয়ার আয়োজন। রোজিনা বলছেন, ‘পানি আমগরে জীবন বাঁচাই। আমার সেই পানিতি ডুবে যাইতেছি’ এখন গরু-ছাগল, হাঁস-মুরগি কনে রাখি?’ গ্রামের আবদুল গফুর তিন বিঘা জমিতে আউশ-আমনের আবাদ করেছিলেন। তার ক্ষেত্রও এখন দরিয়া। তিনি বলেন, ‘ঈদের আগে আল্লাহর গজব নাইমে আইছে। আমগরে সব আনন্দ পানিতে ভাইসে গেছে’। কাজিপুর সদর, মাইজবাড়ী ও শুভগাছা ইউনিয়নের ৯টি গ্রামের বাড়িঘর পানিতে ডুবে গেছে। দুই শতাধিক মানুষ মহাবিপাকে পড়েছেন। ভাঙনের কবলে পড়েছে বাড়িঘর ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। শুভগাছা ইউপি ৩নং ওয়ার্ডের সদস্য নয়ন সরকার পানিবন্দি ও ভাঙনের কথা স্বীকার করে বলেন, পানিবন্দি ও ভাঙনকবলিত লোকজনের তালিকা করে ইউএনও অফিসে দেওয়া হবে।