শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ০৩:০৩ পূর্বাহ্ন

ইনানী সী-বিচে দেশী-বিদেশী পর্যটকের ঢল

রিপোর্টার নাম
  • আপডেট সময় : 4:36 pm, রবিবার, ৯ জুন, ২০১৯
Digital Camera
Digital Camera

কায়সার হামিদ মানিক, কক্সবাজার প্রতিনিধি : ঈদ উপলক্ষে টানা ছুটিতে পর্যটকদের অব্যাহত আগমনে সীমান্ত উপজেলা উখিয়ার ইনানীর সী-বীচে দেশী বিদেশী পর্যটকের ঢল নেমেছে। আনন্দ-উচ্ছ্বাসের সমন্বয়ে তাদের পদচারণায় মুখর হয়ে উঠেছে পুরো বীচ এলাকা। এখানে আয়নার মতো স্বচ্ছ নীলাব পানি, কোরালের ছড়াছড়ি আর পড়ন্ত বিকালে সূর্যাস্তের অপরূপ দৃশ্য নজর কেড়েছে দর্শণার্থীদের। আন্তর্জাতিক মহলে স্বীকৃত দীর্ঘতম কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের লীলা ভূমি ইনানী সী-বীচ যেন পর্যটকদের আনন্দ ভ্রমণে যোগ করেছে ভিন্নমাত্রার প্রফুল্লতা। ইনানী বীচের বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে প্রকৃতি আপনা-আপনিতেই ছড়িয়ে ছিটিয়ে রেখেছে অসংখ্য কোরাল। এসব কোরালের রহস্যময়ী অবস্থান অবলোকন করতে হুমড়ি খেয়ে দেশ-বিদেশ থেকে এই বীচে আসে হাজারো পর্যটক। ইনানী বীচের অদূরেই রয়েছে আরো মন মাতানো প্রশান্তিদায়ক পাটুয়ারটেক সী-বীচ। পাটুয়ারটেক সী-বিচের একটু পূর্বে পাহাড়ের নিচে ঐতিহ্য ঘেরা রহস্যময়ী কানা রাজার গুহা। কানা রাজার গুহার পাশেই স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্মৃতি বিজড়িত ঐতিহাসিক ফইল্লা চাকমার মাচাং ঘর। সেটি দেখতে উৎসুক থাকে পর্যটকরা। পশ্চিমে বিস্তীর্ণ নান্দনিক সমুদ্রের ঢেউ, পূর্বে উঁচু পাহাড়, তার মাঝেই ইনানী সী-বীচ। পৃথিবীর দীর্ঘতম বেলাভূমি কক্সবাজার থেকে টেকনাফ বীচের উখিয়ার ইনানী সী-বিচ দেখতে ও সৌন্দর্য্য উপভোগ করতে সাধারণ দর্শনার্থীদের চেয়ে রাজধানীসহ দূর-দুরান্ত থেকে আসা ভিআইপি পর্যটকদের পদচারনা অনেক বেশি। যার ফলে মুখরিত হয়ে উঠেছে পর্যটন এলাকা। জনশ্র“তি রয়েছে, এক সময় ইনানী সী-বীচের জলরাশি ও ঢেউয়ের নৈপুণ্যতা প্রদর্শণী আর প্রকৃতির দৃশ্য উপভোগ করে সময় কাটাতেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। মূলতঃ ধাপে ধাপে এ বীচের আকর্ষণ গুরুত্ব বেড়েছে স্বাধীনতার পর থেকে। সাধারণ পর্যটকরা কক্সবাজার শহর সংলগ্ন বীচ ভ্রমণ করে তাদের নিজ আবাস স্থলে ফিরে নিজেকে গর্বিত মনে করে বলে একাধিক পর্যটকরা উৎফুল্লচিত্তে জানিয়েছেন। সরজমিন জানা যায়, দেশী-বিদেশী পর্যটকরা কক্সবাজার ও সেন্টমার্টিনের চেয়ে ইনানী বিচে অবকাশ যাপন ও দর্শনে অধিকতর সময় ব্যয় করতে চাইলেও পর্যাপ্ত পরিমাণ নিরাপত্তা ও আবাসিক হোটেল-মোটেল না থাকায় তাদেরকে কক্সবাজারে ফিরে যেতে হয় বলে জানালেন সিলেট থেকে আসা পর্যটক দম্পতি সাদেকুর রহমান ও নিলুফা রহমান। তারা বলেন, ইনানী বীচে কক্সবাজার বীচের চেয়ে স্বচ্ছ নীলাব পানি, অসংখ্য কোরালের ছড়াছড়ি, সূর্যাস্তের অপরূপ দৃশ্য ও সমুদ্র ঘেষা পাহাড়।
যার কারণে পর্যটকরা এখানে বেশি আনন্দ উপভোগ করতে পারে। ঢাকার যাত্রাবাড়ী থেকে ভ্রমণে আসা পর্যটক সঞ্জয় দাশ, ফেনী থেকে আসা পর্যটক মোর্শেদুল হক, রাজশাহী থেকে আসা দম্পতি শাহ মোয়াজ্জেম ও শাকিলা ইয়াছমিন, চট্টগ্রামের হালিশহর এলাকার প্রফেসর নুর মোহাম্মদসহ আরও একাধিক পর্যটক ইনানী সী-বীচ ঘুরে খুশি মনে এ প্রতিবেদকে বলেন, লম্বা ছুটি থাকায় পবিত্র ঈদুল আযহার আনন্দ ভাগাভাগি করতে আমরা এখানে বেড়াতে এসেছি। ইনানী সী-বীচ তথা কক্সবাজারের মনোরম পরিবেশ দেখে খুব ভালই লেগেছে। আমরা আগে শুনেছিলাম ইনানী সী-বীচে সূর্যাস্তের কথা কিন্তু বাস্তবে দেখে নিজেকে গর্বিত মনে হচ্ছে। তারা বলেন, সমুদ্রের পানিতে নেমে গোসল, প্রবাল পাথরে বসে ছবি করছি। ইনানী বিচের পূর্ণাঙ্গ রূপ দেখতে পর্যটকদের কিছু সময় হাতে নিয়ে আসতে হলেও ভাটার সময় এই বীচের পানি যেমন নীলাভ দেখায়, তেমনি ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কোরাল পাথুরের উপর ছুটাছুটি স্মৃতির মানসপটে ফটোসেশন করা, সূর্যাস্ত দর্শন আরও কত কিচ্ছু মনকে আন্দোলিত করে তোলে। আবার জোয়ারের সময় থেকে কিছুক্ষণ অবস্থান কালে জোয়ারের স্বচ্ছ পানিতে ঢেউয়ের আছড়ে ক্রমেই ছড়িছিটিয়ে থাকা অসংখ্য কোরালের অদৃশ্য হয়ে যাওয়া, ইনানীর বড় ও ছোট খালে জোয়ারের পানিতে টুইটুম্বর হওয়া, খালে মাছ ধরার নৌকা ও ফিশিং বোটের নড়াচড়া, ইনানীর পাশেই সবুজ-শ্যামল গ্রামের চিরাচরিত চিত্র, পাহাড়ের সবুজ গাছ-গাছালি, বীচের লাল কাঁকড়াদের হুড়োহুড়ি, সাগরে জেলেদের মাছ শিকারের দৃশ্য দেখতে কার না ভাল লাগে।

সংবাদটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

এই রকম আরো জনপ্রিয় সংবাদ
© All rights reserved © 2017 Cninews24.Com
Design & Development BY Hostitbd.Com