
গ্রাম পর্যায়ে নারী ও শিশু স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করতে উপকূলীয় এলাকায় পর্যাপ্ত স্বাস্থ্য সেবা কেন্দ্র এবং এসব কেন্দ্রে দক্ষ চিকিৎসক ও পর্যাপ্ত ঔষধ সরবরাহ থাকায় জেলায় কমেছে নারী ও শিশু মৃত্যুর হার।
একটা সময় ছিলো যখন অধিকাংশ নারী বাড়িতে সন্তান প্রসব করতেন এখন সেই প্রবণতা কমে গেছে। তবে গর্ভবতী অবস্থায় নিয়মিত স্বাস্থ্য কেন্দ্রে এসে প্রশিক্ষিত চিকিৎসকের পরামর্শ নিলে জেলায় নারী মৃত্যুর হার আরো কমবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ঠরা।
এক সময়ে নারী ও শিশুদের স্বাস্থ্য সেবাসহ সকল ধরণের চিকিৎসা নিতে গ্রামের সাধারণ মানুষকে মাইলের পর মাইল পেড়িয়ে উপজেলা সদর অথবা জেলা শহরে যেতো হত। বর্তমানে বাড়ির কাছেই মিলছে সেসব সেবা। সরকার তৃণমূল এই জনগোষ্ঠীর স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করতে ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কেন্দ্র ও কমিউনিটি ক্লিনিক স্থাপন করায় এর সুফল পেতে শুরু করেছেন গ্রামের মানুষ। ফলে এসব এলাকায় কমেছে নারী ও শিশু মৃত্যুর হার।
এবিষয়ে জেলার পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের উপ পরিচালক ডা. জসিম উদ্দিন মুকুল জানান, ২০১০ সালে জেলায় যেখানে নারী মৃত্যুর সংখ্যা ছিলো ২১ জন ২০১৫ সালে এসে এর সংখ্যা কমে দাঁড়িয়েছে ১৩ জনে। এ ছাড়া ২০১০ সালে জেলায় শিশু মৃত্যুর সংখ্যা ছিলো ৩৫০ জন আর ২০১৫ সালে এসে এর সংখ্যা কমে দাঁড়িয়েছে ১২৫ জনে। আগামীতে এই সংখ্যা আরো কমবে বলে মনে করনে তিনি।
এদিকে একজন নারী গর্ভবতী হবার পর থেকে নিয়মিত স্বাস্থ্য কর্মীর তত্ত্বাবধানে থাকা এবং দক্ষ দাই অথবা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে সন্তান প্রসব করালে নারী ও শিশু মৃত্যুর হার আরো কমানো সম্ভব বলে মনে করেন পটুয়াখালী জেলার সিভিল সার্জন ডা. মো. সেলিম মিয়া।
তিনি জানান ২০১৫ সালে জেলায় মোট ৩৭হাজার ৪’শ ৩০ জন নারী সন্তান প্রসব করেছেন। এর মধ্যে ২৯হাজার ২’শ ২৫জন নারী বাড়িতে সন্তান প্রসব করেন।
পটুয়াখালী জেলায় বর্তমানে ১টি ২৫০ শয্যা হাসপাতাল, ১টি মাতৃ ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্র, ৬টি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, ৫৩টি ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র, ১২টি স্বাস্থ্য উপকেন্দ্র, ২১৯টি কমিউনিটি ক্লিনিক এবং ৪৬৩টি স্যাটেলাইট ক্লিনিকে মাধ্যমে নারী ও শিশুদের বিশেষ স্বাস্থ্য সেবা প্রদান করা হচ্ছে।
এ ছাড়া মান উন্নিত স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র রয়েছে ২৬টি। এসব কেন্দ্রে সার্বক্ষণিক গর্ভবতী নারীদের সন্তান প্রসবের জন্য আধুনিক সব ব্যবস্থা রয়েছে।