মঙ্গলবার (২৪ মে) সকাল ৮ থেকে এ কর্মবিরতি শুরু হয়েছে। বাংলাদেশ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ধানমন্ডি ও উত্তরা দুই শাখায় একযোগে এ কর্মবিরতি শুরু হয়।
বাংলাদেশ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসক ও শিক্ষক কল্যাণ সমিতির সভাপতি প্রফেসর ডা. ফজলুল কাদের বাংলানিউজকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
উল্লেখ্য, বাংলাদেশ মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের চিকিৎসক, কর্মকর্তা-কর্মচারীরা সরকারি নিয়ম অনুযায়ী ৭ম পে-স্কেলের সকল সুযোগ-সুবিধা পেয়ে আসছে।
বারডেম, ইবনে সিনা, উইমেন্স মেডিকেলসহ কয়েকটি হাসপাতাল সমপরিমাণ সুযোগ-সুবিধা গত দু’মাস আগে বাস্তবায়ন করলেও এ হাসপাতাল করেনি।
এর আগে ১৬ মে থেকে চিকিৎসক ও কর্মকর্তা-কর্মচারীরা আলাদাভাবে সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত দু’ঘণ্টা করে কর্মবিরতি পালন করে আসছে।
বাংলাদেশ মেডিকেলের দু’শাখায় ৫ শতাধিক চিকিৎসক, সাড়ে ৪ শতাধিক নার্স, ৭ শতাধিক ৪র্থ শ্রেণির কর্মচারী, ৫০ জন কর্মকর্তা ও ২ শতাধিক স্টাফ রয়েছে।
আইসিইউ, সিসিইউ, জরুরি বিভাগ কর্মবিরতির আওতার বাইরে থাকার কথা থাকলেও এ সকল বিভাগও বন্ধ রয়েছে বলে জানিয়েছেন রোগী ও স্টাফরা।
এর ফলে হাসপাতালে আগত রোগী ও ভর্তি রোগীরা পড়েছেন চরম ভোগান্তিতে। চিকিৎসা না পেয়ে অনেক রোগীকে ফিরে যেতে দেখা গেছে।
হাজারীবাগ থেকে শ্বাসকষ্ট সমস্যা নিয়ে বৃদ্ধা বাবা আবুল বাশারকে নিয়ে এসেছেন মেয়ে সুলতানা রাজিয়া। নিয়মিত এ হাসপাতালে বাবাকে দেখান এ হাসপাতালে।
রাজিয়া বলেন, রাতে শ্বাসকষ্ট হয়েছে। ডাক্তারকে ফোন করার পর বলেন সকালে হাসপাতালে নিয়ে আসতে। এসে দেখি হাসপাতালের কার্যক্রম বন্ধ। কি করব বুঝতে পারছি না।
গাইনি বিশেষজ্ঞ ডা. নাঈমা মাসুদকে দেখাতে নীলক্ষেত থেকে এসেছেন ফাতেমা খাতুন। আজ আল্ট্রাসনোগ্রাম করার পর অপারেশন করার কথা।
ফাতেমা খাতুনের স্বামী মো. রফিক উল্যাহ বলেন, সকাল আটটায় আসতে বলেছে, এসে দেখি সব বন্ধ। কি করবো বুঝতে পারছি না।
তিনদিন আগে স্ত্রীকে ভর্তি করেছেন চাঁদপুরের ইয়াকুব নবী। আল্ট্রাসনোগ্রাম করতে দিলেও গতদিনে হয়নি। মঙ্গলবার হবে এ আশায় এসে দেখেন কাউন্টার বন্ধ।
ইয়াকুব জানান, প্রতিদিন ৬শ টাকা সিট ভাড়া দিচ্ছি। রক্ত পরীক্ষায় গেছে দু’দিন। ডাক্তার তো নেই। আজ আল্ট্রাসনোগ্রাম করাবো, সকাল আটটায় এসে দেখি কাউন্টার বন্ধ।
হাসপাতাল ঘুরে দেখা যায়, জরুরি বিভাগ থেকে শুরু করে সব ইউনিট বন্ধ রয়েছে। রোগীরা এসে ফিরে যাচ্ছেন। চিকিৎসক না থাকায় বিপাকে পড়েছে ভর্তি রোগীরা।
চিকিৎসাসেবা ব্যাহত হওয়ার জন্য দুঃখ প্রকাশ করে সভাপতি প্রফেসর ফজলুল কাদের বলেন, আমাদের ন্যায্য দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত কর্মবিরতি চলবে।
কর্মকর্তা-কর্মচারী কল্যাণ সমিতি, বিএমএমআরআই’র ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মো. শরফুজ্জামান বলেন, জীবন যাত্রার মান ও দ্রব্যমূল্যের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে।
নতুন পে-স্কেল ঘোষণার পর থেকে কর্তৃপক্ষকে অনেকবার চিঠি দেওয়া হয়েছে। গত একবছর ধরে তারা তালবাহানা করে আসছে। বাধ্য হয়ে এ কর্মবিরতি দেওয়া হয়েছে।



ঢাকা: ৮ম পে-স্কেলের সমান সুবিধা প্রদানসহ বেশ কিছু দাবিতে অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতির ডাক দিয়েছে বাংলাদেশ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসক ও কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।






