প্রিন্ট এর তারিখঃ অক্টোবর ২৬, ২০২৫, ১২:৩০ পি.এম || প্রকাশের তারিখঃ মে ৩, ২০১৬, ৯:২৪ পি.এম
‘ভাগিনাকে ৫০ হাজার টাকা দিয়ে স্বামীকে খুন করায় রাবেয়া’
![]()
খাগড়াছড়ির রামগড়ে আপন ভাগিনাকে ৫০ হাজার টাকা দিয়ে সৌদি প্রবাসী স্বামী মুমিনুল হককে (৪৫) খুন করায় স্ত্রী রাবেয়া বেগম (৩৫)।
গত সোমবার রাতে রাবেয়া ও তার ভাগিনা ফিরোজসহ কিলিং মিশনে অংশ নেয়া চার ব্যক্তিকে গ্রেফতারের পর দীর্ঘ ৮৯ দিনের মাথায় এ হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটিত হয়। মঙ্গলবার রাবেয়া বেগম, ভাগিনা ফিরোজ, ভাতিঝা সাইফুল ও ফিরোজের বন্ধু কালাম খাগড়াছড়ি জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আবু ইউছুফ নোমানের আদালতে হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন।
পুলিশ ও নিহতের স্বজনরা জানান, রামগড় উপজেলার পূর্ব চৌধুরিপাড়ার বৈদ্যটিলার বাসিন্দা ও সৌদি আরব প্রবাসী মুমিনুল হক দুর্ঘটনায় আহত হয়ে চিকিৎসার জন্য গত ডিসেম্বর মাসে দেশে আসেন। গত ৩ ফেব্রুয়ারি তিনি নিখোঁজ হন। স্ত্রী রাবেয়া বেগম স্বামীর আত্মীয় স্বজনদের জানায় তিনি সৌদি আরব ফিরে গেছেন। কাউকে না বলে হঠাৎ করে তার বিদেশে ফিরে যাওয়া এবং তার মোবাইল ফোন বন্ধ থাকা ইত্যাদি কারণে মুমিনের আত্মীয় স্বজনদের সন্দেহ হয়।
তার ছোট ভাই আবুল হাশেম বলেন, গত ২৭ এপ্রিল তাদের এক প্রতিবেশী অটোরিকশা চালকের কাছে খাগড়াছড়ির গুইমারা থানা থেকে সংগ্রহ করা একটি লাশের ছবি দেখে এটি তার ভাই মুমিনের বলে শনাক্ত করেন। তিনি বলেন, তারা গুইমারা থানায় গিয়ে লাশটি তার ভাইয়ের বলে জানান। তিনি বলেন, মুমিনুলের দুই সন্তানের মধ্যে মেয়ে অষ্টম শ্রেণিতে ও ছেলে চতুর্থ শ্রেণিতে পড়ে। ২০০১ সালে উপজেলা বেরাগী টিলার মোস্তফা ডিলারের পালিত কন্যা রাবেয়া বেগমকে বিয়ে করেন মুমিনুল।
গুইমারা থানার উপ পরিদর্শক মো: মশিউর রহমান বলেন, গত ৫ ফেব্রুয়ারি রাতে গুইমারা থানাধীন রবীন্দ্র কার্বারীপাড়া নামক জনবসতিহীন এলাকার জঙ্গল থেকে গলা কাটা অবস্থায় লাশটি উদ্ধার করা হয়। এ ব্যাপারে পুলিশ বাদী হয়ে থানায় একটি হত্যা মামলা রুজু করা হয়। লাশের পরিচয় উদঘাটনের পর হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটনে তৎপরতা শুরু করা হয়। গোপনসূত্রে খবর পেয়ে গত সোমবার রাতে রামগড় সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার কাজী হুমায়ুন রশিদের নেতৃত্বে রামগড় থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাইন উদ্দিন খান, গুইমারা থানার ওসি মোস্তাফিজুর রহমানসহ পুলিশের একটি বিশেষদল রামগড় পৌরসভার চৌধুরিপাড়া এলাকার বাসা থেকে নিহত মুমিনুল হকের স্ত্রী রাবেয়া বেগমকে আটক করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তিনি স্বামীকে খুন করানোর ঘটনা স্বীকার করার পরই পুলিশের অন্য একটি দল রাতেই কিলিং মিশনে অংশ নেয়া ভাগিনা ফিরোজ ও তার বন্ধু কালামকে গুইমারা থেকে গ্রেফতার করা হয়। ফিরোজ ও কালামের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী কিলিং মিশনের প্রধান ভাড়াটে খুনি মিঠুকে ধরতে সোমবার রাতেই ফেনীতে অভিযানে যায় পুলিশের অন্য একটি দল। কিন্তু তাকে গ্রেফতার করা যায়নি। মঙ্গলবার দুপুরে গ্রেফতার করা হয় কিলিং মিশনের অপর সদস্য রাবেয়া বেগমের ভাতিঝা সাইফুলকে।
আটককৃতদের মঙ্গলবার খাগড়াছড়ি জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আবু ইউছুফ নোমান এর আদালতে হাজির করা হয়। চারজন আসামীই হত্যাকান্ডের দায় স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। আদালতে দেয়া জবানবন্দিতে স্ত্রী রাবেয়া বেগম জানান, পারিবারিক ঝগড়াঝাটির কারণে তিনি ভাগিনা ফিরোজকে ৫০ হাজার টাকা দিয়ে স্বামী মুমিনুল হককে খুন করানোর সিদ্ধান্ত নেয়। ফিরোজ তার বন্ধু কালামসহ খুনের সমস্ত পরিকল্পনা নেয়। এ কাজের জন্য ফেনী থেকে মিঠু নামে এক পেশাদার খুনিকে ভাড়া করা হয়। খুনের সমস্ত পরিকল্পনা সম্পন্ন করার পর ৩ ফেব্রুয়ারি কবিরাজি চিকিৎসার কথা বলে মুমিনুল হককে অটোরিকশাযোগে রামগড় থেকে নিয়ে আসে রাবেয়ার ভাতিঝা সাইফুল। ওইদিন গুইমারায় ফিরোজের বাসায় থাকেন মুমিন। পরদিন ৪ ফেব্রুয়ারি গুইমারার রবীন্দ্র কার্বারীপাড়া নামক জনবসতিহীন এলাকায় কিলিং মিশনের সদস্য মিঠু ও সাইফুল প্রথমে গিয়ে অবস্থান নেয়। পরে মোটরসাইকেলে করে মুমিনুলকে ওই স্থানে নিয়ে যান ফিরোজ ও কালাম। ৪ ফেব্রুয়ারি রাত ১১টার দিকে মুমিনুলকে হত্যা করা হয় । পরে লাশ জঙ্গলে ফেলে দেয়া হয়।
প্রধান সম্পাদক:- তোফায়েল হোসেন তোফাসানি, ক্রাইম নিউজ ইন্টারন্যাশনাল (প্রা:) লি: কর্তৃক প্রকাশিত একটি অনলাইন পোর্টাল ও সংবাদ সংস্থা। অফিস- সি-৫/১, ছায়াবীথি, সাভার, ঢাকা-১৩৪০।ঢাকা অফিস- বাড়ি নং-১, রোড-২৮, সেক্টর-৭, উত্তরা, ঢাকা-১২৩০
ইউএসএ অফিস- ২১৬২৮ ১৩৬ এভিনিউ ষ্প্রিংফিল্ড গার্ডেন, নিউইয়র্ক- ১১৪১৩, ইউএসএ। ফোন- ০২-৭৭৪১৯৭১, সেল- +৮৮০১৭১১০৭০৯৩১, +৮৮০১৩০০৫৫৫৪৪০, ই-মেইল- cninewsdesk24@gmail.com, news@cninews24.com
Design & Development By HosterCube