টাঙ্গাইলের গোপালপুরে দরজিকে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় অজ্ঞাত তিন ব্যক্তির বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।
নিহত দরজি নিখিল চন্দ্র জোয়ারদারের স্ত্রী আরতি জোয়ারদার বাদী হয়ে গতকাল শনিবার রাতে গোপালপুর থানায় মামলাটি দায়ের করেন।
গোপালপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল জলিল বলেন, মামলায় কারও নাম উল্লেখ করা হয়নি। অজ্ঞাত তিনজনকে আসামি করা হয়েছে।
গতকাল দুপুরের দিকে গোপালপুর পৌর এলাকার ডুবাইল বাজারে দরজি নিখিলকে (৫০) লোকজনের সামনেই কুপিয়ে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা।
ঘটনার ছয়-সাত ঘণ্টার মধ্যেই হত্যার দায় স্বীকার করে জঙ্গিগোষ্ঠী ইসলামিক স্টেট (আইএস)।
পুলিশ জানিয়েছে, মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) সম্পর্কে কটূক্তি করার অভিযোগে ২০১২ সালে নিখিল গ্রেপ্তার হয়েছিলেন। তাই এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জঙ্গিগোষ্ঠীর সম্পৃক্ততা থাকতে পারে।
নিখিল চন্দ্র ওই বাজার এলাকার মৃত নলিনীকান্ত জোয়ারদারের ছেলে। তিনি নিজের বাড়ির সামনে দরজির দোকান চালাতেন।
পুলিশ ও নিখিলের পরিবারের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, প্রতিদিনের মতো গতকাল সকালে নিখিল দোকান খোলেন। ১২টার দিকে একটি মোটরসাইকেলে করে তিনজন তরুণ ওই দোকানে আসে। তারা ‘কথা আছে’ বলে নিখিলকে দোকান থেকে ডেকে রাস্তার পাশে নিয়ে যায়। কথা শুরুর একপর্যায়ে তারা চাপাতি দিয়ে নিখিলের মাথা ও গলায় আঘাত করতে থাকে। নিখিলের চিৎকার শুনে তাঁর স্ত্রী আরতি বাড়ি থেকে বেরিয়ে আসেন।
আরতি বলেন, বের হয়েই তিনি দেখেন দুই তরুণ নিখিলকে কোপাচ্ছে এবং একজন মোটরসাইকেলে বসে আছে। আরতি এ সময় এগিয়ে যেতে চাইলে তাঁকে রক্তমাখা চাপাতি দিয়ে ভয় দেখানো হয়। কয়েক মিনিটের মধ্যে মৃত্যু নিশ্চিত করে হামলাকারীরা মোটরসাইকেলে করে পালিয়ে যায়। এ সময় ঘটনাস্থলের কাছে থাকা এক ব্যক্তি ইট হাতে তাদের দিকে এগিয়ে গেলে হামলাকারীরা ককটেল মারার ভয় দেখায়।
চলে যাওয়ার সময় হামলাকারীরা একটি ব্যাগ ফেলে যায়। পরে পুলিশ ওই ব্যাগ থেকে চারটি ককটেল-জাতীয় বস্তু ও দুটি চাপাতি উদ্ধার করে।
আরতি বলেন, তাঁর স্বামীর কোনো শত্রু ছিল না। কেন তাঁকে খুন করা হলো, তা তাঁরা বুঝতে পারছেন না।
র্যাব-১২-এর ৩ নম্বর কোম্পানি কমান্ডার মহিউদ্দিন ফারুকী প্রথম আলোকে বলেন, পারিবারিক শত্রুতা, জমি নিয়ে বিরোধ ও জঙ্গিবাদ—এই তিন বিষয় সামনে রেখে তাঁরা ঘটনার তদন্ত করবেন।
পুলিশ ও এলাকাবাসী জানান, নিখিল অত্যন্ত নিরীহ ছিলেন। ২০১২ সালে ডুবাইল বাজারে আড্ডা দেওয়ার সময় মহানবী (সা.) সম্পর্কে তিনি নেতিবাচক মন্তব্য করেছিলেন বলে অভিযোগ ওঠে। ওই সময় তাঁর বিরুদ্ধে বিক্ষোভ মিছিল হয়। মিছিলকারীরা তাঁকে মারধর ও দোকান ভাঙচুর করেন। পরে মামলা করা হলে পুলিশ তাঁকে গ্রেপ্তার করে। কিছুদিন জেল খাটার পর তিনি জামিনে মুক্তি পান। এরপরও এলাকায় ফিরতে তাঁর সমস্যা হচ্ছিল। পরে এলাকার লোকজনের সঙ্গে সমঝোতা করে তিনি বাড়িতে ফেরেন।
নিখিলের মেয়ে লিপি চন্দ্র বন্যা বিবিসি বাংলাকে বলেছেন, স্থানীয় একটি চায়ের দোকানে ইসলাম অবমাননা করে যে মন্তব্য দেওয়ার অভিযোগ তাঁর বাবার বিরুদ্ধে আনা হয়, সেটি মিথ্যা। মিথ্যা অভিযোগে পুলিশ তাঁর বাবাকে গ্রেপ্তার করে। ২৪ দিন পর তিনি ছাড়া পান।
গোপালপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জানান, উগ্রপন্থীরাই যে নিখিলকে খুন করেছে, তা এখনই নিশ্চিত করে বলা সম্ভব নয়। এর পেছনে অন্য কোনো বিষয় আছে কি না, সেটাও খতিয়ে দেখা হবে।
প্রধান সম্পাদক:- তোফায়েল হোসেন তোফাসানি, ক্রাইম নিউজ ইন্টারন্যাশনাল (প্রা:) লি: কর্তৃক প্রকাশিত একটি অনলাইন পোর্টাল ও সংবাদ সংস্থা। অফিস- সি-৫/১, ছায়াবীথি, সাভার, ঢাকা-১৩৪০।ঢাকা অফিস- বাড়ি নং-১, রোড-২৮, সেক্টর-৭, উত্তরা, ঢাকা-১২৩০
ইউএসএ অফিস- ২১৬২৮ ১৩৬ এভিনিউ ষ্প্রিংফিল্ড গার্ডেন, নিউইয়র্ক- ১১৪১৩, ইউএসএ। ফোন- ০২-৭৭৪১৯৭১, সেল- +৮৮০১৭১১০৭০৯৩১, +৮৮০১৩০০৫৫৫৪৪০, ই-মেইল- cninewsdesk24@gmail.com, news@cninews24.com