মঙ্গলবার, ২৮ অক্টোবর ২০২৫, ১২:০৩ অপরাহ্ন

রসুন চাষে ভাগ্য খুলেছে কৃষকের

রিপোর্টার নাম
  • আপডেট সময় : 10:03 am, রবিবার, ১ মে, ২০১৬

কৃষকের মুখে এখন সাদা সোনার হাসি। আর এ হাসির কারণ ধান নয়, রসুন। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় রসুনই খানসামার কৃষকের মুখে হাসি এনে দিয়েছে। সাদা সোনা হিসেবে পরিচিত রসুন এ বছর বাম্পার ফলনের সাথে সাথে গত বছরের তুলনায় এর বাজার মূল্যও বেশি রয়েছে।

রসুন চাষে অন্যতম স্থানগুলো হলো খানসামার ভাবকী ইউপির গারপাড়া, রামনগর, গুলিয়াড়া, কাচিনিয়া, দেউলগাঁও, হাশিমপুর, টংগুয়া, ভবানীগঞ্জ, জয়গঞ্জ, আগ্রা এবং মারগাঁওসহ বিভিন্ন এলাকা।

গোয়ালডিহি ইউপি চেয়ারম্যান মো. শাখাওয়াত হোসেন লিটন জানান, রসুনের আবাদ এলাকার কৃষকদের ভাগ্য বদলিয়েছে। এ এলাকার সব টিনের আধা-পাকা ঘর রসুন চাষীদের। তারা রসুন রাখার জন্য ঘরই আলাদা করে বানিয়েছেন। এবার রসুন চাষে অনেক অভাবী সংসারে এনে দিয়েছে স্বচ্ছলতা।

2016_05_01_09_48_22_RSzN3yy4TS7rppWpeuNMbDKt1wDyBN_originalগারপাড়া গ্রামের রমেশ রায় নামে একজন রসুন চাষী জানান, রসুন উৎপাদনে বিঘা প্রতি রসুনের বীজ, বীজ বপন, সার, কীটনাশক, শ্রমিকদের মজুরি, বিচালী সব মিলে প্রায় ৩০ থেকে ৪০ হাজার টাকা খরচ হয়। প্রতি বিঘা জমি থেকে রসুন বিক্রি হয় ৫০ থেকে ৯০ হাজার টাকা।

বগুড়া থেকে আসা একজন রসুন ব্যবসায়ী মো. আকবর আলী জানান, এ বছর রসুনের দাম বেশি তাই বর্তমানে ৮০ কেজি রসুন বস্তা ভেদে ৫ হাজার থেকে ৭ হাজার টাকা পযর্ন্ত বিক্রি হচ্ছে।

উত্তরাঞ্চলের সবচেয়ে বড় রসুনের হাট দিনাজপুরের খানসামার কাচিনিয়ায়। গত কয়েক দশক ধরে বসে এই রসুনের হাট। সপ্তাহে ৪ দিন শুক্রবার, মঙ্গলবার, রোববার ও বুধবার  ফজর থেকে শুরু করে রাত ৯টা পর্যন্ত চলে এই হাট। কাচিনীয়াহাট থেকে প্রতি হাটবারে ১৫ থেকে ২০টি ট্রাকে করে দুর-দুরান্ত থেকে আসা রসুনের ব্যাপারীরা রসুন ক্রয় করে নিয়ে যাচ্ছেন।

এছাড়াও চিরিরবন্দর উপজেলার রাণীরবন্দর সুইহারীবাজারস্থ বিভিন্ন কুরিয়ার সার্ভিস ও যাত্রীবাহী কোচগুলোতে করে প্রতিনিয়ত শ’ শ’ বস্তা রসুন চলে যাচ্ছে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে।

খানসামার মাড়গাঁও গ্রামের আবুল কালাম জানান, এ উপজেলার রসুন স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে উত্তরাঞ্চলের ঠাকুরগাঁও, রংপুর, বগুড়া, টাঙ্গাইল, সিরাজগঞ্জ, ঢাকা, কুমিল্লা, ফেনী, চট্টগ্রাম, বরিশাল, সিলেটসহ বিভিন্ন জেলার ক্রেতাদের কাছে বিক্রি করা হচ্ছে। ভারত ও চীনের রসুনের বাজারমূল্য বেশি হওয়ায় এ বছর চাহিদা অনুযায়ী রসুনের বাজার মূল্য বেশি হয়েছে।

কৃষক ও কৃষি বিভাগ জানায়, আমন ধান কাটার পরই কৃষকেরা রসুন আবাদের জন্য জমি তৈরি করেন। এরপর জমিতে কৃষক পুঁতে দেন রসুনের কোয়া (কোষ)। তারপর রসুন ক্ষেত খড় ও নাড়া (ধান কাটার পর অবশিষ্ট অংশ) দিয়ে ঢেকে দেন। ক’দিনের মধ্যেই খড় ও নাড়ার ফাঁক দিয়ে উঁকি মারে সবুজ রসুনের চারাগাছ।

উপজেলা কৃষি অফিসার মো. এজামুল হক জানান, চলতি মৌসুমে উপজেলায় ৮৫২ হেক্টর লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হলেও ৭৪০ হেক্টরের বেশি জমিতে রসুনের চাষ হয়েছে। প্রতি হেক্টর জমিতে ৮ থেকে ৯ মে.টন উৎপাদন হবে। চাষীরা এ বছর আধুনিক চাষাবাদ পদ্ধতি প্রয়োগ করায় রসুনের বাম্পার ফলন হয়েছে। মার্চ মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে রসুন উত্তোলন আর বেচাকেনা শুরু হয়।

সংবাদটি শেয়ার করুন

এই রকম আরো জনপ্রিয় সংবাদ
© All rights reserved © 2017 Cninews24.Com
Design & Development BY Hostitbd.Com