কুড়িগ্রামে গাছ কেটে সাবার করা হচ্ছে অবৈধ করাত কলে। অনুমোতি ছাড়াই জেলার আনাচে-কানাচে ব্যাঙের ছাতার মতো গড়ে উঠেছে প্রায় আড়াই শতাধিক করাত-কল। এ সব করাত-কলে প্রতিদিন শত শত গাছ কেটে সাবার করায় পরিবেশ হুমকির মুখে পড়েছে।
জানা যায়,৯টি উপজেলা নিয়ে গঠিত সীমান্ত ঘেঁষে জেলা কুড়িগ্রাম। এই জেলায় রয়েছে ৭৩ টি ইউনিয়ন ও ৩ টি পৌরসভা। পৌরসভা সহ বিভিন্ন ইউনিয়নের আনাচে-কানাচে গড়ে উঠেছে অবৈধ ব্যাঙের ছাতার মতন করাত-কল। এই করাত-কল গুলোতে প্রতিনিয়তই গাছ কেটে সাবার করা হচ্ছে। সরকারি রাস্তার দু ধারে লাগানো বন দুর্বৃত্ত কতৃক কেটে উজার করায় পরিবেশ মারাত্মক হুমকিতে পড়ছে ।এ ছাড়াও কোন কারন ছাড়াই সরকারি, আধা সরকারি, স্বায়ত্বশাসিত ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের গাছ কেটে ফেলায় প্রাকৃতিক দুর্যোগের প্রবনতা বৃদ্ধি পেয়েই যাচ্ছে এই জেলায়। বাংলাদেশে ১৯২৭ এবং এর অধীনে প্রণীত করাত-কল (লাইসেন্স) বিধিমালা, ২০১২ (সংশোধিত) এবং করাত-কল (লাইসেন্স) বিধিমালা, ১৯৯৮ কে বৃদ্ধা আগুলী দেখিয়ে সকল অবৈধ করাত কল গুলো চালানো হচ্ছে। এই আইনগুলোতে করাত -কল স্থাপন, পরিচালনা এবং লাইসেন্সিং-এর জন্য নিয়মকানুন নির্দিষ্ট করে দেয়া থাকলেও কোন করাত – কল মালিকই তা মানচ্ছেন না। করাত- কল চালাতে গেলে লাইসেন্স বাধ্যতামূলক ও লাইসেন্স হালনাগাদ থাকার বিধান থাকলেও গুরুত্বপূর্ণ এই বিষয়টি কেউ আমলে নিচ্ছেন না। মধ্যকুমোরপুর এলাকার শাহাদাত হোসেন,ডুংডুঙির হাটের আব্দুল খালেক ও শুলকুর বাজারের তুহিন বকসি বলেন,অবৈধ করাত- কলে সরকারি রাস্তার গাছ কেটে সাবার করা হচ্ছে। রাতারাতি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সহ বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠানের গাছ গুলো কেটে ফেলা হচ্ছে।যার ফলে রাস্তার মাটি ধুয়ে যাচ্ছে,খড়া বৃদ্ধি পেয়ে জমির উর্বতা কমে যাচ্ছে। বৃষ্টি পাতও অনেক কম হচ্ছে। এ বছরে বৃষ্টিপাত নাই বললেই চলে। করাত- কলের উপর সরকারের নিয়ম নীতির প্রয়োগ থাকা দরকার। ধরলা সেতুর পুর্ব পাড়ের করাত কল মালিক মোঃ আবু মিয়া বলেন,প্রায় দশ বছর ধরে করাত কল চালাছি। লাইসেন্স এর কথা কখনো শুনিনি। আমি গাছ ফাঁড়াই করে নিজেই কাঁঠের ব্যবসা করি। এ ছাড়াও যারা গাছ নিয়ে মিলে আসেন তাদেরও গাছ ফাঁড়াই করে দেই। যাত্রাপুরের করাত কলের মালিক মোঃ নুর হোসেন বলেন,করাত- কল এর জন্য লাইসেন্স করতে হয় জানি। আমি লাইসেন্স করার জন্য চেষ্টা করছি। কুড়িগ্রাম জেলা বন বিভাগ সুত্রে জানা যায়, কুড়িগ্রাম সদর,রাজারহাট,ফুলবাড়ি,নাগেশ্বরী ও ভুরুঙ্গামারী উপজেলা জোনে করাত-কল আছে ৪৪৬ টি এর মধ্যে লাইসেন্স আছে ১৩৯ টির এবং আবেদন করা আছে ৩৬ টির। চিলমারী,রৌমারী,রাজিবপুর ও উলিপুর উপজেলা জোনে করাত- কল আছে১৬০ টি,লাইসেন্স আছে ৫৯ টির এবং লাইসেন্স এর জন্য আবেদন করেছে ১০ টি করাত -কল। এই পরিসংখ্যান অনুযায়ী এই জেলায় অবৈধ করাত -কলের সংখ্যা হলো ৫০৮ টি। কুড়িগ্রাম বন বিভাগের রেঞ্চ কর্মকর্তা মোঃ সাদিকুর রহমান বলেন,আমরা করাত-কল নিয়মিত পরিশর্দন করছি। অবৈধ করাত-কল লাইসেন্স এর আওতায় আনতে চেষ্টা করা হচ্ছে। যারা অবৈধ করাত কল চালাছেন তাদের বিরুদ্ধে আইনী ব্যবস্তা গ্রহণ করা হবে। পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মোঃ রেজাউল করিম বলেন,পরিবেশের সনদপত্র ছাড়া করাত- কলের লাইসেন্স হবে না।যারা করাত কলের জন্য পরিবেশের সনদপত্রের আবেদন করেন আমরা ভালো করে পর্যালোচনা করে তাদের সনদ পত্র দিয়ে থাকি।