শনিবার, ২৫ অক্টোবর ২০২৫, ১০:৫৩ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
বাংলাদেশের রিজার্ভ বৃদ্ধিকে আইএমএফের প্রশংসা চব্বিশের জুলাই আন্দোলনের প্রত্যেকটি শহীদের ঘটনা তুলে আনতে হবে : চিফ প্রসিকিউটর বিমানবন্দরে অগ্নিকাণ্ডের তদন্ত করবে ৪ দেশের বিশেষজ্ঞরা : স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জুলাই সনদের আলোকে রাষ্ট্র সংস্কারে অঙ্গীকারবদ্ধ সরকার: আদিলুর গুম প্রতিরোধে শুধু আইনগত নয়, প্রয়োজন প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কার : ড. আসিফ নজরুল শাহবাগে এনসিপির দুই পক্ষের সংঘর্ষ হঠকারিতার সুযোগ নেই, ফেব্রুয়ারির সুষ্ঠু নির্বাচনই সরকারের মুক্তি: সাইফুল হক ‘সংস্কার দিয়ে জনগণের হাতে ক্ষমতা আসবে না’ শান্তি ও সহযোগিতার বিশ্ব গড়তে জাতিসংঘকে সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে হবে : অধ্যাপক ইউনূস কারা এনসিপিতে আসতে পারবে না, জানালেন সারজিস

শ্রমজীবী মানুষের অধিকার আদায়ে স্মরণীয় দিন আজ: প্রধান উপদেষ্টা

ডেস্ক রিপোর্ট
  • আপডেট সময় : 10:12 pm, বুধবার, ২২ অক্টোবর, ২০২৫

আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) তিনটি কনভেনশনে স্বাক্ষর করেছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার।

বুধবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূসের উপস্থিতিতে শ্রম ও কর্মসংস্থান এবং নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন এ তিনটি কনভেনশন অনুসমর্থন পত্রে স্বাক্ষর করেন।

এ সময় প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, এ দিনটি বাংলাদেশের শ্রমজীবী মানুষের অধিকার আদায়ের ইতিহাসে স্মরণীয় হয়ে থাকবে ।

প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং এক বার্তায় এ তথ্য জানিয়েছে।

কনভেনশন স্বাক্ষরকালে আরও উপস্থিত ছিলেন প্রধান উপদেষ্টার আন্তর্জাতিক বিষয়ক বিশেষ দূত লুৎফে সিদ্দিকী, প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের সচিব (সংযুক্ত) মো. মাহমুদুল হোসাইন খান, শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. মো. সানোয়ার জাহান ভূঁইয়া, বাংলাদেশে আইএলও’র কান্ট্রি ডিরেক্টর ম্যাক্স টুনোনসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।

কনভেনশনগুলো হলো- পেশাগত নিরাপত্তা ও স্বাস্থ্য বিষয়ক কনভেনশন, ১৯৮১ (নং-১৫৫); কর্মক্ষেত্রে নিরাপত্তার মান উন্নয়নে প্রচারণামূলক কাঠামো কনভেনশন, ২০০৬ (নং-১৮৭) এবং কর্মক্ষেত্রে সহিংসতা ও হয়রানি প্রতিরোধ বিষয়ক কনভেনশন, ২০১৯ (নং-১৯০)। কনভেনশন তিনটির মধ্যে কনভেনশন ১৮৭ ও কনভেনশন ১৫৫ আইএলও’র মৌলিক কনভেনশন। ২০২২ সালে এ দুটিকে মৌলিক কনভেনশন হিসেবে গ্রহণ করে আইএলও।

এ সময় ২০১৩ সালের রানা প্লাজা ট্র্যাজেডির কথা স্মরণ করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, রানা প্লাজা ট্র্যাজেডির পর তৎকালীন সরকার সব কিছুতে রাজি হলো। কিন্তু যা করবে বলেছিল সেগুলো কিছুই হয়নি। শুধু ‘হচ্ছে, হবে’ করেই চলছিল। আমরা বললাম যে ‘হচ্ছে-হবে’ আর নয়, এটা আমরা করেই যাব।

তিনি বলেন, প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পরই আমার প্রথম দৃষ্টি ছিল শ্রম অধিকারে। বারবার বৈঠক করলাম। সবখানে বলতে থাকলাম যে এটা করতেই হবে। এটাতে স্বাক্ষর করা মানে আমাদের সবার উপকার। আমাকে বলা হলো, আগামী জেনেভা বৈঠকে যেতে হবে। আমি বোঝার চেষ্টা করলাম অতীতে কেন কেউ গেল না।

সংশ্লিষ্ট সবাইকে কঠোর পরিশ্রমের জন্য কৃতজ্ঞতা জানিয়ে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, আমরা এক দীর্ঘ যাত্রার পর গন্তব্যে পৌঁছালাম। এটা প্রথম ধাপ উত্তরণ হলো। কাগজে সই করেই কাজ শেষ না, কাজ কেবল শুরু। যে ওয়াদা করলাম সেটা পালন করতে হবে। কনভেনশন কী কথা বলা আছে, কোন অধিকারের কথা আছে সেটা সবার কাছে পৌঁছে দিতে হবে। সবাইকে সচেতন করতে হবে।

‘বাংলাদেশের শ্রমিক অধিকারে আজকের দিনটি স্মরণীয় হয়ে থাকবে’ উল্লেখ করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, রানা প্লাজা ট্র্যাজেডি থেকে যে যাত্রা শুরু হলো আজ তা একটা গন্তব্যে পৌঁছালো, অন্তত কাগজের অংশটুকু শেষ করলাম। রানা প্লাজার শ্রমিকরা তাঁদের জীবন দিয়ে যে দায়িত্ব আমাদের ওপর দিয়ে গেছে সেটার এক ধাপ পার হলো। আমি নিজের কাছে নিজে ওয়াদা করেছিলাম যে, এটা করবই। আজ আনন্দ পাচ্ছি যে একটা পর্যায়ে পৌঁছাতে পেরেছি। আমাদের পরিশ্রম সার্থক হবে সঠিকভাবে সর্বত্র বাস্তবায়ন করতে পারলে।

শ্রম উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন বলেন, ‘আজকে অন্তর্বর্তী সরকারের একটি তাৎপর্যপূর্ণ দিন। এটি আমাদের জন্য অনেক বড় চ্যালেঞ্জ ছিল। এ কাজে সবাই ভীষণ পরিশ্রম করেছেন। সে কারণেই সাফল্য এসেছে। প্রধান উপদেষ্টা সার্বক্ষণিক আমাদের নির্দেশনা দিয়েছেন। সবমিলিয়ে সবার দিনরাত পরিশ্রমের ফলেই এই সাফল্য এসেছে। শ্রমিকদের অধিকার রক্ষায় অন্তর্বর্তীকালীন সরকার শুরু থেকেই আন্তরিকভাবে কাজ করছে।

লুৎফে সিদ্দিকী বলেন, এ যাত্রা সহজ ছিল না, কিন্তু আনন্দদায়ক ছিল। জেনেভা কনভেশনে আমাদের যে অভিজ্ঞতা হয়েছে তা অতুলনীয়। সকলেই ভীষণ পরিশ্রম করেছেন। এজন্য আমরা কৃতজ্ঞ।

শ্রমিকদের সুরক্ষা নিশ্চিতে তিনটি গুরুত্বপূর্ণ কনভেনশন স্বাক্ষর করায় অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে আন্তরিক অভিনন্দন জানিয়েছেন আইএলও’র কান্ট্রি ডিরেক্টর ম্যাক্স টুনোন। তিনি বলেন, বাংলাদেশ সরকার, শ্রমিক ও আইন প্রয়োগকারীদের সঙ্গে মিলে কনভেশনের বাস্তবায়ন নিশ্চিত করতে আইএলও প্রয়োজনীয় সহযোগিতা অব্যাহত রাখার প্রতিশ্রুতি দিচ্ছে।

এর পাশাপাশি, শ্রম আইন সংস্কার কমিশনের বেশ কিছু সুপারিশ বাস্তবায়নেও সরকারকে সহযোগিতা প্রদান অব্যাহত রাখার প্রতিশ্রুতি দেন তিনি। এছাড়া, আগামী ফেব্রুয়ারি মাসে অনুষ্ঠিতব্য নির্বাচনে যেসকল রাজনৈতিক দল প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে তাদের ঐকমত্যের ভিত্তিতে একটি শ্রম সনদ (লেবার চার্টার) গ্রহণেরও পরামর্শ দেন তিনি।

উল্লেখ্য, আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার এই তিনটি কনভেনশন অনুসমর্থন শ্রমিকদের সুরক্ষায় অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের দৃঢ় অঙ্গীকারের প্রতিফলন, যা শ্রম খাতের সকল সামাজিক অংশীদারদের আন্তর্জাতিক শ্রমমান যথাযথভাবে অনুসরণ নিশ্চিতকরণে ভূমিকা রাখবে। এ তিনটি কনভেনশন অনুস্বাক্ষরিত হওয়ায় বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ার একমাত্র দেশ হিসেবে আইএলও’র ১০টি মৌলিক কনভেনশন অনুস্বাক্ষরকারী দেশ হলো।

সংবাদটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

এই রকম আরো জনপ্রিয় সংবাদ
© All rights reserved © 2017 Cninews24.Com
Design & Development BY Hostitbd.Com