এ বছর শীতের আগেই চলনবিলসহ সিরাজগঞ্জের বিভিন্ন এলাকায় অতিথি পাখি আসতে শুরু করেছে। সাইবেরিয়ার মতো দূরবর্তী অঞ্চলের তীব্র ঠাণ্ডা ও খাদ্যাভাব এড়াতে পাখিরা তুলনামূলকভাবে অনুকূল পরিবেশের সন্ধানে বাংলাদেশে আসে। এদের আগমনে চলনবিল প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরে ওঠে। দেশের বিভিন্ন এলাকার বিনোদনপ্রেমীরা এই সময় এখানে আসে পাখি দেখতে।
এ মৌসুমে ইতিমধ্যেই মৎস্য ভান্ডারখ্যাত তাড়াশ চলনবিলে ঝাঁকে ঝাঁকে অতিথি পাখির আগমন ঘটছে। জানা গেছে, চলনবিলের মধ্যদিয়ে প্রবাহিত হয়েছে প্রায় ১৪টি নদী ও ২২টি ছোট-বড় বিল। যদিও অনেকগুলোর অস্তিত্ব এখন আর পাওয়া যাবে না। এই মৌসুমে পানি এখনো না শুকালেও চলন বিল ও বেলকুচি উপজেলার যমুনা নদীর চর এলাকায় অতিথি পাখি আসতে শুরু করেছে। প্রতি বছর সাধারণত পানি শুকিয়ে গেলে এদের আগমন ঘটে। তবে এবছর আগেই যমুনা চর ও চলনবিলে নিজের আহার জোগাতে বক, ইটালি, শর্লি, পেঁয়াজ খেকো, ত্রিশুল, বাটুইলা, নারুলিয়া, লালম্বর, কাদাখোঁচা, ফেফি, ডাহুক, বালিহাঁস, পানকৌড়ি, শামকৈলসহ বিভিন্ন প্রজাতির অতিথি পাখির ঝাঁকে ঝাঁকে আগমন ঘটছে। ফেব্রুয়ারি মাস পর্যন্ত এই সব পাখি জেলার বিভিন্ন মাঠে ও গাছে অবস্থান করে। সকাল থেকেই খাবারের খোঁজে ভিড় করে বক, বালিচোরা, পানকৈড় রাতচোরাসহ নানা প্রজাতির পাখি।
চলনবিলে বিভিন্ন জাতের পাখি দেখতে ভিড় জমাচ্ছে বিভিন্ন শ্রেণির বিনোদনপ্রেমীরা। কিন্তু এক শ্রেণির অসাধু পাখি শিকারি সুযোগে জাল ও খাঁচার মাধ্যমে অতিথি পাখি শিকার করছে। অবাধে পাখি শিকারের ফলে পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট হচ্ছে। প্রত্যন্ত বিলাঞ্চলের বিভিন্ন স্থানে প্রতিটি বক ৯০ থেকে ১০০ টাকা, রাতচোরা ২৫০ থেকে ৪৫০ টাকা জোড়া, বালিহাঁস ৩২০ থেকে ৬৭০ টাকা দরে বিক্রি করা হয়। বেসরকারি সংগঠন স্বাধীন জীবনের নির্বাহী পরিচালক আব্দুর রাজ্জাক নাসিম বলেন, পাখিরা শুধু প্রকৃতির শোভা বর্ধন করে না, প্রকৃতির ভারসাম্যও রক্ষা করে। পোকামাকড় খেয়ে এরা কৃষকের উপকার করে। কিন্তু আইন থাকলেও পাখি নিধন বন্ধে তেমন কোনো পদক্ষেপ নেই। অবাধে পাখি শিকার করায় পরিবেশের ওপর প্রভাব পড়ছে, জীববৈচিত্র্য বিপন্ন হয়ে পড়েছে।
এ বিষয়ে সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ শর্মিষ্ঠা সেন গুপ্ত বলেন, অতিথি পাখি পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় কাজ করে। এরা ফসলের ক্ষতিকারক পোকা খায়। যেকারণে ফসলে কীটনাশক ব্যবহার কম করতে হয়। ফসলে উৎপাদন খরচও কম হয়। এছাড়া এদের বিষ্ঠা জমিতে সার হিসাবে কাজ করে। #