রবিবার, ১২ অক্টোবর ২০২৫, ০৩:৫৫ পূর্বাহ্ন

শান্তিতে নোবেল পুরস্কার ঘোষণা আজ: এখনো আশাবাদী ট্রাম্প

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
  • আপডেট সময় : 3:05 pm, শুক্রবার, ১০ অক্টোবর, ২০২৫

নোবেল শান্তি পুরস্কার ঘোষণা করা হবে আজ (শুক্রবার)। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দীর্ঘদিন ধরেই পুরস্কারটি পেতে মরিয়া হয়ে আছেন। যদিও গাজায় যুদ্ধবিরতির চুক্তি দেরিতে হওয়ায় এবছর তার সেই আশা পূরণ হওয়ার সম্ভাবনা ক্ষীণ।

অসলো থেকে এএফপি এ খবর জানায়।

নরওয়ের রাজধানী অসলোতে শুক্রবার স্থানীয় সময় বেলা ১১টায় (বাংলাদেশ সময় বিকেল ৩টায়) নোবেল কমিটি বিজয়ীর নাম ঘোষণা করবে। শান্তিতে নোবেলকে সবচেয়ে মর্যাদাপূর্ণ পুরস্কার হিসেবে গণ্য করা হয়।

ইসরাইল ও হামাসের মধ্যে যুদ্ধবিরতি এবং জিম্মি মুক্তির চুক্তির পরদিন নোবেল শান্তি পুরস্কার বিজয়ীর নাম ঘোষণা করা হচ্ছে। এই চুক্তির মধ্য দিয়ে দুই বছরেরও বেশি সময় ধরে চলা গাজার যুদ্ধের অবসানে নতুন করে আশা জেগেছে।

যদিও বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ট্রাম্পের মধ্যস্থতা এই চুক্তিতে গুরুত্বপূর্ণ হলেও, নোবেল কমিটির সিদ্ধান্তের জন্য সেটি দেরী হয়ে গেছে। কারণ কমিটি সোমবারই তাদের চূড়ান্ত বৈঠক করেছে এবং বিজয়ী নির্বাচনের ব্যাখ্যাসহ বিবৃতি প্রস্তুত করেছে। এগুলো সাধারণত শেষ বৈঠকের কয়েক দিন আগে থেকেই নির্ধারণ করা থাকে।

ইতিহাসবিদ ও শান্তিতে নোবেল বিশেষজ্ঞ আসলে সভেন এএফপিুকে বলেন, ‘গাজা চুক্তির কোনো প্রভাবই পড়েনি। কারণ কমিটি আগেই সিদ্ধান্ত নিয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘ট্রাম্প এই বছর পুরস্কার পাবেন না, এ ব্যাপারে আমি শতভাগ নিশ্চিত।’

সভেনের অভিযোগ, ট্রাম্প দীর্ঘদিন ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুকে গাজায় হামলার পূর্ণ স্বাধীনতা দিয়েছেন এবং সেনাবাহিনীকে বড় ধরনের সামরিক সহায়তা দিয়েছেন। 

জানুয়ারিতে দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতা গ্রহণের পর থেকেই ট্রাম্প দাবি করে আসছেন, বিশ্বজুড়ে একাধিক সংঘাত সমাধানের জন্য তিনিই নোবেল পাওয়ার যোগ্য। বিশেষজ্ঞরা অবশ্য এই দাবিকে ‘বাড়াবাড়ি’ বলে মনে করেন। 

পুরস্কার জয়ের সম্ভাবনা সম্পর্কে জানতে চাইলে বৃহস্পতিবার এএফপিকে ট্রাম্প বলেন, ‘আমি জানি না তারা কী করবে, তবে জানি ইতিহাসে আর কেউ নয় মাসে আটটি যুদ্ধ থামাতে পারেনি। আমি আটটা যুদ্ধ থামিয়েছি, এর আগে এমন হয়নি। এর মধ্যে গাজা ছিল ‘সবচেয়ে বড়’ সংঘাত।’

তবে অসলো বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, ট্রাম্পের ‘আমেরিকা ফার্স্ট’ নীতি শান্তিতে নোবেল প্রাপ্তির মূল আদর্শের পরিপন্থি। ১৮৯৫ সালের উইলে আলফ্রেড নোবেল এই শর্ত উল্লেখ করেন।

এ বছর পুরস্কারের জন্য ৩৩৮ জন ব্যক্তি ও সংস্থাকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে। তবে নোবেল কমিটির নিয়ম অনুযায়ী, এই তালিকা ৫০ বছরের জন্য গোপন রাখা হবে। 

এ বছর সুস্পষ্ট কোনো ফেভারিট না থাকায় অসলোতে বেশ কয়েকটি নাম নিয়ে জল্পনাকল্পনা চলছে। যুদ্ধ ও দুর্ভিক্ষে ভোগা মানুষদের খাদ্য ও সহায়তার জন্য জীবন বাজি রাখা স্বেচ্ছাসেবকদের সংগঠন সুদানের ‘ইমার্জেন্সি রেসপন্স রুমস’ এর নামও শোনা যাচ্ছে। এছাড়া রাশিয়ার প্রয়াত সমালোচক অ্যালেক্সি নাভালনির স্ত্রী ইউলিয়া নাভালনায়া এবং আন্তর্জাতিক নির্বাচন পর্যবেক্ষণকারী সংস্থা ‘অফিস ফর ডেমোক্র্যাটিক ইন্সটিটিউশনস অ্যান্ড হিউম্যান রাইটস’-এর নামও আলোচনায় রয়েছে।

আবার বিশ্বব্যবস্থার প্রতি প্রতিশ্রুতির প্রমাণ দেখাতে নোবেল কমিটি এমন কাউকে পুরস্কৃত করতে পারে যার কারণে ট্রাম্পের সমালোচনার মুখে পড়বে। উদাহরণ হিসেবে বলা হচ্ছে জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস, জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা ইউএনএইচসিআর কিংবা ফিলিস্তিনি ত্রাণ সংস্থা ইউএনআরডব্লিউএ-এর কথা। 

এ ছাড়া আন্তর্জাতিক বিচার আদালত বা আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতও বিবেচনায় থাকতে পারে। আবার সাংবাদিকদের সুরক্ষায় বিশ্বব্যাপী কাজ করা ‘কমিটি টু প্রটেক্ট জার্নালিস্টস’ অথবা ‘রিপোর্টার্স উইদাউট বর্ডারস’-কেও পুরস্কৃত করা হতে পারে।

নোবেল ইনস্টিটিউটের মুখপাত্র এরিক আসহেইম বলেন, ‘বৈশ্বিক অস্থিরতার কারণে পুরস্কার না দেওয়ার যে গুঞ্জন ছিল, তা ভিত্তিহীন।

গত বছর জাপানের হিরোশিমা ও নাগাসাকির বোমা হামলার শিকার হয়ে বেঁচে যাওয়া এবং পারমাণবিক অস্ত্রের বিরুদ্ধে প্রচার চালানো সংগঠন নিহন হিদানকিয়ো শান্তিতে নোবেল পায়।

শান্তিতে নোবেল পুরস্কার হিসেবে একটি ডিপ্লোমা সনদ, একটি স্বর্ণপদক এবং ১২ লাখ মার্কিন ডলারের চেক দেওয়া হয়।

সোমবার অর্থনীতিতে নোবেল ঘোষণার মধ্য দিয়ে ২০২৫ সালের নোবেল মৌসুম শেষ হবে।

সংবাদটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

এই রকম আরো জনপ্রিয় সংবাদ
© All rights reserved © 2017 Cninews24.Com
Design & Development BY Hostitbd.Com