সিরাজগঞ্জের কাজিপুর উপজেলার যমুনায় জেগে ওঠা মনসুর নগর চরের জমি ভূমিহীনদের মাঝে বন্দোবস্ত না দিতে বিক্ষোভ মিছিল করেছে চরাঞ্চলবাসী। বুধবার (৮ অক্টোবর) বেলা এগারোটায় মনসুর নগর ইউনিয়নের মাজনাবাড়ী গ্রামের সহস্রাধিক মানুষ মিছিল নিয়ে এসে কাজিপুর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও ভারপ্রাপ্ত উপজেলা নির্বাহী অফিসার নাঈমা জাহান সুমাইয়ার অফিসে স্মারকলিপি প্রদান করেছে।
মেঘাই নৌবন্দর থেকে আলমপুর চৌরাস্তা পর্যন্ত প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ ও উপজেলা ভূমি অফিস চত্বরে বিক্ষোভ মিছিলটি শেষ হয়। বিক্ষোভ মিছিলে বক্তব্য রাখেন কাজিপুর উপজেলার নাটুয়ারপাড়া ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুল কাদের, কাজিপুর উপজেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক সাইদুল ইসলাম, বাংলাদেশের কমিউনিষ্ট পার্টির নেতা ও বিশিষ্ট কবি আলতাফ হোসেন মাস্টার, মনসুরনগর ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সভাপতি আব্দুল মান্নান, কৃষকনেতা আব্দুল্লাহ আল মামুন, জাহাঙ্গীর আলম, কেএম বেলাল হোসেন প্রমূখ।
বক্তাগণ উল্লেখ করেন, ১২ নম্বর মনসুরনগর ইউনিয়নের এসএ ৫৬ এবং আরএস ৫৩ এর ভূমির মালিকগণ পূর্বে সিএস মূলে মালিকানাপ্রাপ্ত হন। ওই সময় সিকস্তি জমির কিছু অংশ তৎকালিন জমিদারের নামে রেকর্ড হয়। পরবতর্র্তিতে সিকস্তি জমি পয়স্তি হলে সেখানকার জনগণ জমিদারকে সেলামী দিয়ে ওই জমির পত্তন নেন। এমতাবস্থায় ১৯৫৮ থেকে ১৯৬৩ সাল পর্যন্ত ওই জমিগুলো ওই প্রজাদের নামে এস এ রেকর্ড হয়। এরপর থেকে তারা যথারীতি খাজনা দিয়ে আসছিলেন। কিন্তু আরএস রেকর্ডের সময় (১৯৭৮-১৯৮০) ওই জমির কিছু অংশ নদীসিকস্তি হলেও ভ্রমাত্মকভাবে পুরো জমিই সিকস্তি দেখিয়ে সরকারের নামে আরএস রেকর্ড হয়। কিন্তু তখন থেকেই সেখানকার জনগণ সেসব জমি ভোগদখল করে আসছেন। ওইসব জমির খাজনা ২০০৫ সাল পর্যন্ত তারা পরিশোধও করেছেন। তারা আরও উল্লেখ করেন, পুরো জমিই এখন জনগণের দখলে। জমিতে ফসল ছাড়াও স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা, খেলার মাঠ, হাট বাজার রয়েছে। এমতাবস্থায় ওইসব জমি ভূমিহীনদের মাঝে বন্দোবস্ত দেয়ায় সেখানে উভয় পক্ষের মধ্যে সংঘাতের সৃষ্টি হয়েছে। বক্তাগণ সরেজমিন দেখে সিএস ও এসএমূলে জমির মালিকদেরকে পূর্নবহালের দাবী জানান।
কাজিপুর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও ভারপ্রাপ্ত ইউএনও নাঈমা জাহান সুমাইয়া জানান, চরের জনগণ স্মারকলিপি দিয়েছেন। দেখে পরবর্তী ব্যবস্থা নেয়া হবে।