ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জে বাংলাদেশ মেডিক্যাল ও ডেন্টাল কাউন্সিলের (বিএমডিসি) নিবন্ধন বিহীন এক দন্ত চিকিৎসককে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করেছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। বৃহস্পতিবার উপজেলার আঠারবাড়ি ইউনিয়নের রায় বাজারে অবস্থিত বিসমিল্লাহ্ ডেন্টাল কেয়ার নামক প্রতিষ্ঠানে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে দন্ত চিকিৎসা প্রদান করে আসা এই ব্যক্তিকে জরিমানা করা হয়।
জানা যায়, উপজেলার আঠারবাড়ি ইউনিয়নের রায় বাজারে শ্রীবলতলা গ্রামের সবুজ মিয়ার ছেলে এমদাদুল হক জয় দাঁতের চিকিৎসার নামে অপচিকিৎসা দিয়ে আসছিলো। সম্প্রতি উপজেলার সোহাগী ইউনিয়নের বগাপুতা গ্রামের আব্দুল হাই এর ছেলে মারুফ হাসান শামীম (২২) তার অপচিকিৎসার শিকার হয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হন। এ ব্যাপারে গত ১৮ নভেম্বর ও ২৯ ডিসেম্বর ভুক্তভোগী শামীমের বাবা আব্দুল হাই উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবরে এই বিষয়ে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, আব্দুল হাই এর ছেলে মারুফ হাসান শামীম দাঁতের ব্যাথা জনিত কারণে লোকমুখে শুনে অভিযুক্ত ভুয়া চিকিৎসকের কাছে চিকিৎসা করাতে যায়। পরে অভিযুক্ত চিকিৎসক ভুক্তভোগীর একটি দাঁত উপড়ে ফেলেন। কিছুদিন যেতে না যেতেই শামীমের আরো কয়েকটি দাঁতে প্রচন্ড ব্যাথা শুরু হয়। পুনরায় সেই হাতুড়ে চিকিৎসকের কাছে গেলে সে রোগীর আরো তিনটি দাঁত কেটে ক্যাপ পড়িয়ে দেয়। এরপর রোগীর মুখ গহ্বরের দাঁতের চোয়ালে ক্ষতের সৃষ্টি হয়ে মুখমন্ডল ফোলে যায়। পরে শামীমকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক জানান, ছেলেটি অপচিকিৎসার শিকার হয়েছে। শামীমের বাবা আব্দুল হাই পরে খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন ওই ডাক্তারের বাংলাদেশ মেডিক্যাল ও ডেন্টাল কাউন্সিলের কোন নিবন্ধন নেই। সে একজন ভুয়া চিকিৎসক। আব্দুল হাইয়ের অভিযোগের প্রেক্ষিতে ৬ ফেব্রুয়ারি (বৃহস্পতিবার) উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ইকবাল হোসাইন ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে অভিযুক্ত ভুয়া চিকিৎসককে বাংলাদেশ ডেন্টাল কাউন্সিলের নিবন্ধন ব্যতিরেকে ‘বিসমিল্লাহ ডেন্টাল কেয়ার’ নামে চিকিৎসা প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করায় বাংলাদেশ মেডিক্যাল ও ডেন্টাল কাউন্সিল আইন ২০১০ এর ২৮ ধারা মোতাবেক ৫০ হাজার টাকা জরিমানা আরোপ করেন। একইসাথে অভিযুক্ত ব্যক্তি যথাযথ কর্তৃপক্ষের নিবন্ধন ব্যতিরেকে আর কখনই দন্ত চিকিৎসা করতে পারবে না মর্মে মুচলেকা আদায় করেন।
আদালত পরিচালনার সময় ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক কাজী সাবিত আব্দুল্লাহ ও ঈশ্বরগঞ্জ থানা পুলিশের একটি টিম উপস্থিত ছিলেন।