বৃহস্পতিবার, ২৭ মার্চ ২০২৫, ০৪:২৮ অপরাহ্ন

দুর্নীতিমুক্ত সুসংগঠিত মানবিক রাষ্ট্র উপহার দিতে চাই.. ডা. শফিকুর রহমান

আমানুর রহমান খোকন, কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি
  • আপডেট সময় : 8:07 pm, শনিবার, ২৫ জানুয়ারী, ২০২৫
All-focus

সমাজে অনাচার হলে প্রতিবাদ করবো, আমরা সব সময় ন্যায়ের পক্ষ নিবো, অন্যায়ের বিপক্ষে অবস্থান করবো। আমাদের দলেরও কেউ যদি অন্যায় করে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করবো। আমরা দুর্নীতিমুক্ত সুসংগঠিত মানবিক রাষ্ট্র উপহার দিতে চাই। আমাদেরকে দেশের হেকমতের দায়িত্ব দিলে জনগনের প্রয়োজনীতা বিবেচনায় সুষম বন্টন নিশ্চিত করা হবে। কুড়িগ্রামসহ দেশের অনগ্রসর জেলাগুলোর জন্য সমবন্টন নিশ্চিত করা হবে। প্রয়োজনে পিছিয়ে পড়া জেলাগুলোর জন্য আলাদা বরাদ্দের ব্যবস্থা করা হবে। কুড়িগ্রাম সরকারি কলেজ মাঠে ২৪ জানুয়ারি শুক্রবার সকালে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী কুড়িগ্রাম জেলা শাখার আয়োজনে কর্মী সম্মেলনে জামায়াতে আমীর ডা. শফিকুর রহমান এসব কথা বলেন।
তিনি আরও বলেন, ২০২৪ এর জুলাই আগষ্টে যারা শহীদ ও পঙ্গু হয়েছে আমরা তাদের প্রতি কৃতজ্ঞ। দীর্ঘ সাড়ে ১৫ বছরে ফেসিষ্ট সরকারের হাতে শহীদ হয়ে সারা বিশ্বে আলোরন সৃষ্টি করেছে সে এই অঞ্চলেরই সন্তান আবু সাঈদ। এই কুড়িগ্রাম বহুদিক থেকেই বঞ্চিত আছে। এখানে একটা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় আছে, যার কোন অস্তিত্ব নেই, আছে শুধু কঙ্কাল। তার নিজস্ব ক্যাম্পাস নেই, ধুকে ধুকে চলছে। অথচ এই কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় এখানকার চেহারা বদলে দিতে পারে। এটি সীমান্তবর্তী জেলা। এখানকার মানুষের সুচিকিৎসার কোনো সুব্যবস্থা নেই। দেশের অন্য জেলায় একই সাথে কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, মেডিকেল কলেজ, ইঞ্জিনিয়ারিং বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে। কিন্তু এখানে এসবের কিছুই তৈরি করা হয় নি কেন, এটা কোন ধরণের ইনসাফ? বর্ষা এলে এখানকার নদী পাড়ের মানুষজন পানিতে তলিয়ে যাবার চিন্তায় ঘুমাতে পারে না। তাদের জন্য কী পরিকল্পনা রয়েছে। একটি তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন হচ্ছে না। কাদের ইঙ্গিতে তা বন্ধ হয়ে আছে। ফ্যাসিস্ট সরকারের কারণে তা হয় নি। তিস্তাপাড়ের মানুষ যেন নিশ্চিন্তে ঘুমাতে পাড়ে। কুড়িগ্রামের ন্যায্য দাবী অনেক আছে। এ জেলার ৭১ ভাগ জেলার দারিদ্র্যসীমার নিচে আছে। তারা এমন কী গোনা বা পাপ করেছে কোন পাপের জন্য বাংলাদেশের মানুষ হয়েও তাদের ভাগ্যের কোনো পরিবর্তন হচ্ছে না। তাই আমরা ন্যায্যতার ভিত্তিতে সমাজ ব্যবস্থা গঠনের কথা বলি। আমরা দেশ পরিচালনার দায়িত্ব পেলে দেশের যা সম্পদ থাকবে তা সবার জন্য সুষম বন্টন নিশ্চিত করবো। আওয়ামী লীগ উন্নয়নের নামে আমাদের সমস্ত সম্পদ চুরি করে বিদেশে নিয়ে গেছে। ওরা ২৬ লক্ষ কোটি টাকা বাংলাদেশ থেকে চুরি করে নিয়ে গেছে। এটা তাদের দেশ হলে তারা টাকা বিদেশে পাচার করতো না। এটা তাদের জমিদারি এখান থেকে খাজনা আদায় করে বাইরে পাচার করতো, দেশ তাদের এই দেশের বাইরে। কথায় কথায় তারা আমাদের বিদেশ যেতে বলে নিজেরাই বিদেশে চলে গেছে। বিগত ১৫ বছর যারা জীবন দিয়েছেন, আহত হয়েছেন, যাদের উপর বিভিন্নভাবে জুলুম অত্যাচার করা হয়েছে, তাদের কাছে হাত জোর করে বিনয়ের সাথে অনুরোধ করি যাতে এমন হটকারি কাজকর্ম না করি যাতে আমাদের জাতীয় ঐক্য নষ্ট হয়। চুরি, চামারি, ঘুষ ও মামলা বাণিজ্য না করি যাতে ফ্যাসিবাদীরা আশ্রয়-প্রশ্রয় না পায়। তারা যাদের মাইনরিটি বলেছেন আমরা তাদের মানরিটি বলি না। আমরা বলি তারা আমাদের ভাই। আল্লাহ আমাদের যেমন এদেশের গর্বিত নাগরিক হিসেবে বানিয়েছেন তারাও এই দেশের তেমনি গর্বিত নাগরিক। ধর্ম নিয়ে বিভাজন শোষনের হাতিয়ার। দেশের মানুষের প্রতি তথা দেশের প্রতি তাদের এতো ভালবাসা থাকলে তারা দেশ ছেড়ে পালিয়ে না গিয়ে দেশের মাটি কামড়ে পড়ে থাকতো। ৫ আগস্ট জাতি যখন মুক্তি পেল তখন আমরা সহযোদ্ধাসহ সকলকে ধৈর্য ধরে শান্তি শৃঙ্খলা রক্ষা করতে বলেছি। আওয়ামী লীগ সব কিছুতেই জামায়াতকে দোষারোপ করে। অথচ তাদের কথা ছিল তারা ক্ষমতা ছাড়লে আমরা তাদের ৫ লাখ মানুষ মেরে ফেলবো। কিন্তু ৫ আগস্ট থেকে এখন পর্যন্ত কোনো মানুষ মারা যায় নি। অথচ তারা সাধারণ মানুষ, কৃষক, সাংবাদিক কাউকে ছাড় দেয় নি। তারা চলে যাবার পূর্ব মুহূর্ত পর্যন্ত মানুষ খুন করে ক্ষমতায় থাকতে চেয়েছিল। বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী কুড়িগ্রাম জেলা শাখার আয়োজনে কর্মী সম্মেলনে জামায়াতে আমীর ডা. শফিকুর রহমান এসব কথা বলেন। কুড়িগ্রাম জেলায় প্রথমবারের মতো জনসম্মুখে বিশাল জনসমাগম নিয়ে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কর্মী সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। কেন্দ্রীয় মজলিশে শুরা সদস্য ও কুড়িগ্রাম জেলা জামায়াতের আমীর মাওলানা আব্দুল মতিন ফারুকীর সভাপতিত্বে এবং জেলা জামায়াতের সেক্রেটারী মাওলানা নিজাম উদ্দিনের সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন- বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা আব্দুল হালিম, কেন্দ্রীয় কর্ম পরিষদ সদস্য অধ্যক্ষ মাওলানা মমতাজ উদ্দিন ও অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান বেলাল, কেন্দ্রীয় কর্ম পরিষদ সদস্য ব্যারিস্টার সালেহী, অধ্যাপক আজিজুর রহমান স্বপন প্রমুখ। সম্মেলন শেষে সদর উপজেলা মডেল মসজিদে জুম্মার নামাজ আদায় করে নাগেশ্বরী উপজেলার নাখারগগেঞ্জ ভারতীয় বিএসএফ’র গুলিতে নিহত ফেলানী খাতুনের কবর জিয়ারত করেন। এ সময় ফেলানীর বাবা, মা এবং ভাই-বোনকে আমীরে জামায়াত উপহার সামগ্রী তুলে দেন।

সংবাদটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

এই রকম আরো জনপ্রিয় সংবাদ
© All rights reserved © 2017 Cninews24.Com
Design & Development BY Hostitbd.Com