৫ আগস্টের বিপ্লব স্বাভাবিক কোনো বিপ্লব ছিল না। বরং এই বিপ্লব সংগঠিত হয়েছে ছাত্র-জনতার যুগপৎ সংগ্রাম, সর্বোপরি জীবনের পর জীবন, শাহাদাতের পর শাহাদাতের মাধ্যমে অর্জিত বিজয়।
আর এই বিজয়ের মাধ্যমে আল্লাহ তা’য়ালা তার দেওয়া ওয়াদা পূরণ করেছেন বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের সেক্রেটারি ড. মুহাম্মদ রেজাউল করিম।
তিনি শুক্রবার সকাল ৮টায় রাজধানীর রামপুরাস্থ এক মিলনায়তনে ঢাকা মহানগরী উত্তর জামায়াতের রামপুরা থানা উত্তর আয়োজিত ইউনিট দায়িত্বশীল সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ মন্তব্য করেন।
থানা আমীর ফজলে আহমদ ফজলুর সভাপতিত্বে ও থানা সেক্রেটারি হাফিজুল ইসলামের পরিচালনায় সমাবেশে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন ঢাকা মহানগরী উত্তরের সহকারী সেক্রেটারি নাজিম উদ্দীন মোল্লা। আরও উপস্থিত ছিলেন নায়েবে আমীর ভিপি শাহাবুদ্দিন, মাওলানা নাসির উদ্দীন হেলালী প্রমূখ।
ড. রেজাউল করিম বলেন, ইতিহাসের ধারাবাহিকতায় আওয়ামী লীগের পতন অনিবার্য ছিল। যদিও তা আমাদের কারও কারও কাছে অসম্ভব বলে মনে হতো। তবে পতনের পরও আওয়ামী লীগ তাদের যুদ্ধ তথা ষড়যন্ত্র অব্যাহত রাখবে এ কথা কারও অজানা ছিল না। তারা ফেরাউন, নমরূদ, হামানের মত দেশে অপশাসন-দুঃশাসন, হত্যা-সন্ত্রাস-নৈরাজ্য চালিয়েছে। এমনকি তারা আমাদের নিরাপরাধ শীর্ষ নেতাদেরকে শহিদ করে দেশের পবিত্র জমিনকে রক্তাক্ত ও কলঙ্কিত করেছে। কিন্তু তারা ক্ষমতাচ্যুত হয়ে দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাবে এ কথা কেউ কখনো কল্পনাও করেনি। এমনকি দেশপ্রেমী সেনাবাহিনী তাদের পালানোর জন্য টাইফ্রেম বেধে দেবে, এটাও ছিল কল্পনাতীত।
তিনি বলেন, ‘এমন দিন আসবে তারা পালানোর জন্য ইঁদুরের গর্তও খুঁজে পাবে না’- শহিদ আল্লামা সাঈদীর এই ভবিষ্যৎ বাণীও সত্যে পরিণত হয়েছে। মূলত, সবকিছুই হয়েছে মহান আল্লাহ তা’য়ালার পরিকল্পনা অনুযায়ী। তাই আত্মহারা না হয়ে অর্জিত বিজয়কে অর্থবহ করতে দলমত নির্বিশেষে জাতীয় ঐক্যের কোনো বিকল্প নেই।
তিনি এ সময় দেশবিরোধী ষড়যন্ত্র মোকাবিলায় সবাইকে সজাগ থাকার আহবান জানিয়ে বলেন, জামায়াতে ইসলামী ইসলামী জ্ঞান চর্চার এক নিপুণ পরিকল্পনার নাম। যারা জামায়াত করেন তাদের জ্ঞানার্জনের প্রধান উৎস হচ্ছে পবিত্র কুরআনুল কারিম। তাই কুরআন ও সুন্নাহর আলোকে ব্যক্তি, পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্র গঠন করার জন্য জামায়াত সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। মূলত জামায়াতে ইসলামী সমাজের কাঙ্ক্ষিত পরিবর্তনের জন্য এক মহতী মিশন নিয়ে দীর্ঘ পরিসরে ময়দানে সক্রিয় রয়েছে।
ড. রেজাউল বলেন, আমরা গণতান্ত্রিক আদর্শ ও মূল্যবোধ অনুসরণ করে জাতিকে একটি ক্ষুধা, দারিদ্র, অপশাসন-দুঃশাসন ও বৈষম্যহীন জনকল্যাণমুখী নতুন বাংলাদেশ উপহার দিতে চাই। মূলত আমরা রাষ্ট্রের সর্বস্তরে আল্লাহর আইন ও সৎ লোকের শাসন প্রতিষ্ঠায় সব নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় অংশীদার।
এ সময় তিনি দেশে গণতন্ত্র, গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ ও জনগণের শাসন প্রতিষ্ঠায় ইউনিট দায়িত্বশীলদের সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকারে প্রস্তুত থাকার আহবান জানান।