সিরাজগঞ্জের কাজিপুরে কম ফলনশীল এবং অনুর্বর কৃষিজমিতে বাঁশের চাষ করে লাভবান হচ্ছেন কৃষকরা। এ উপজেলায় মূলত দেশীয় জাতের তল্লা ও বড়বাশা বাঁশের ব্যাপক চাহিদা থাকায় কৃষকেরা বাড়ির আশপাশের খালি জায়গায় বাঁশ উৎপাদন করছেন। বাড়ি নির্মাণ ও কাগজসহ বিভিন্ন পণ্য উৎপাদন করতে বাঁশের ব্যাপক ব্যবহার হয়।
স্থানীয়রা বলছেন, অতীতের তুলনায় বর্তমানে অনেক বড় বড় বাঁশ বাগান কমে যাচ্ছে, আর্থিক লাভের পাশাপাশি পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায়ও বাঁশবাগান ব্যাপক ভূমিকা রাখছে। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, উপজেলার মেঘাই, সোনামুখী, চালিতাডাঙ্গা, গান্ধাইল, হরিনাথপুর, হাটশিরা, মাইজবাড়ী, মুসলিমপাড়া, বরইতলা, শিমুলদাইড়, মাথাইচাপড় সহ বিভিন্ন গ্ৰামেই বাঁশের বাগান রয়েছে।
গ্রামের অনেক মানুষ বসতবাড়ির আশপাশ ও পরিত্যক্ত জঙ্গলে বাঁশের বাগান করেছে। এর মধ্যে সোনামুখী, চালিতাডাঙ্গা, গান্ধাইল, কাজিপুর সহ অন্যান্য ইউনিয়ন গুলোতে ব্যাপক বাঁশের চাষাবাদ লক্ষ্য করা যায়। কৃষক আব্দুল হাকিম, নিয়াজ উদ্দিন মতিন বলেন, আমাদের কিছু জমি রয়েছে যেখানে চাষাবাদ ভালো হয় না, আবার বিভিন্ন কারনে ফসল উৎপাদন করতে সমস্যা হয়। তাই এসব জমিতে বাঁশের বাগান করেছেন তারা। বাঁশের চাহিদা ভালো থাকায় তারা লাভবানও হচ্ছেন। প্রতিটি বাঁশ ২০০ থেকে ৩০০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে।
স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বেশির ভাগ গ্রামীণ হাটবাজারেই বাঁশ বিক্রি হয়, সেখানে কৃষকরা বাস কেটে নিজেরাই নিয়ে যায়। আবার অনেক সময় বাঁশ ব্যবসায়ীরা এসে বাঁশ বাগান থেকেই বাঁশ কিনে নিয়ে যান। এমনকি জেলা শহরের নির্দিষ্ট স্থানেও বাঁশ বিক্রি হয়। পাইকাররা এসে বাঁশ কিনে বাঁশের পাইকারি চালান রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে নিয়ে যায় এজন্য বাঁশের চাহিদা অনেক বেশি রয়েছে।
সোনামুখী ইউনিয়নের কৃষক নিতাই অঞ্জন রায় বলেন, বাঁশ চাষের জন্য তেমন কোন প্রশিক্ষণের প্রয়োজন হয় না, একবার বাগান লাগিয়ে দিলে যুগ যুগ ধরে সে বাগান থেকে বাঁশ বিক্রি করা সম্ভব। বাঁশ বিক্রিতে তেমন কোন ঝামেলাও নেই। বাঁশ চাষ করে আমরা লাভবান হয়েছি প্রতিটি বাঁশ গড়ে ২০০ টাকা করে বিক্রি করতে পারি।
বাংলাদেশ বন গবেষণা ইনস্টিটিউট (বিএফআরআই) এর তথ্য অনুযায়ী বর্তমানে দেশীয় বাঁশের প্রজাতির সংখ্যা ৪০টি। সিরাজগঞ্জের কাজিপুর উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ শরিফুল ইসলাম জানায়, তারা অনাবাদি জমিতে বাঁশ চাষের জন্য কৃষকদের উৎসাহ দিচ্ছে । এ বিষয়ে কৃষকদের সবরকম পরামর্শ দিছে তারা।