দেশের উত্তরের সীমান্তবর্তী জেলা লালমনিরহাটে ঘন কুয়শায় শীত বাড়ছে । এ জেলা হিমালয়ের অনেকটা কাছাকাছি হওয়ায় তাপমাত্রা হ্রাস পাওয়ার পাশাপাশি ঘন কুয়াশা এবং হিমশীতল বাতাসের প্রবাহ বাড়িয়ে দিচ্ছে শীতের তীব্রতা। রোববার সকাল থেকে ঠান্ডা ও ঘনকুয়াশায় আছন্ন হয়ে আছে গোটা জনপদ।
ভোর থেকে বেলা ১০ টা পর্যন্ত ঘন কুয়াশার কারণে পরিবেশ ছিল স্নিগ্ধ ও শীতল। আবহাওয়াবিদদের মতে, আশ্বিন মাসে মৌসুমী বায়ু কম সক্রিয় থাকায় এবং উত্তরীয় বায়ুর কিছুটা প্রভাব থাকায় শেষ রাতে শীত নেমে এলে ঠান্ডা অনুভূত হয়।
স্থানীয়রা জানান, দিন দিন শীতের মাত্রা অনুভূত হচ্ছে। সন্ধ্যার পর থেকেই উত্তরের ঠান্ডা বাতাসে শীত লাগতে শুরু করেছে। শীতে হালকা গরম কাপড় পরতে হয়েছে । মধ্যরাত থেকেই শীত অনুভব হতে থাকে। টিনের চালে টিপটিপ করে শিশির পড়তে শোনা যায়। ভোর পর্যন্ত গায়ে কম্বল ও কাঁথা নিতে হচ্ছে। এ জেলায় অন্যান্য জেলার আগেই শীতের আগমন ঘটে। নভেম্বরের মাঝামাঝি থেকে জানুয়ারি পর্যন্ত শীতের দাপট বেশি হয়ে থাকে। অন্যদিকে শীতকে কেন্দ্র করে নবান্ন উৎসব শুরু হয়েছে ঘরে ঘরে।
দিনজুড়ে গরম থাকলেও রাতের বেলা শিশিরের ফোঁটায় যেন বৃষ্টির মতো ঝরছে ঠান্ডা। গত কয়েক দিনের শীতের তীব্রতায় বিশেষত শিশু ও বয়স্কদের কষ্ট বেড়েছে। ঘন কুয়াশার কারনে যানবাহনগুলোকে হেডলাইট জ্বালিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে।
লালমনিরহাট সদর এলাকার আব্দুল মিয়া (৪৫) বলেন, গত শুক্রবার থেকে কুয়াশা ও ঠান্ডা প্রভাব অনেকটাই বেশি মনে হচ্ছে।
তারপরও কাজে যাচ্ছি। এমন ঠান্ডা শুরু হলে কয়েকদিনের মধ্যে সকাল সকাল হয়তো কাজে যাওয়া সম্ভব হবে না।
একই কথা জানান জেলা সদরের পঞ্চগ্রাম ইউনিয়নের দিনমজুর জাহিদ হোসেন(৪০)
লালমনিরহাটের ৫ উপজেলার নানান শ্রেণী পেশার মানুষের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়,
এখনও পুরোপুরি প্রচুর ঠান্ডার প্রভাব দেখা না দিলেও ধীরে ধীরে প্রতিনিয়তই কুয়াশা ও ঠান্ডার প্রভাব বেড়েই চলেছে।
রাজারহাট আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা যায়, শনিবার রাত থেকে রোববার সকাল পর্যন্ত সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১৬.৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সুবল চন্দ্র সরকার জানান, ‘শীতের তীব্রতা দিন দিন বাড়বে। চলতি মাসের শেষের দিকে ঠান্ডার প্রকোপ আরও তীব্র হবে।
লালমনিরহাটে পাঁচটি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স বাড়তে শুরু করেছে শীতজনিত রোগীর সংখ্যা । নিউমোনিয়া, সর্দি, কাশি, ডায়রিয়াসহ বিভিন্ন রোগ নিয়ে ভর্তি হচ্ছে রোগীরা।
লালমনিরহাট সদরের ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডাঃ মোঃ আব্দুল মোকাদ্দেম জানান, হাসপাতালে কয়েকদিন থেকে শীতজনিত রোগে আক্রান্ত রোগীদের সংখ্যা বাড়তেছে। আমরা যথাসাধ্য চেষ্টা করছি রোগীদের সেবা দিতে ।