মঙ্গলবার, ১৪ জানুয়ারী ২০২৫, ০৬:৫৮ অপরাহ্ন

স্কুলছাত্রী ধর্ষণের দায়ে আসামির যাবজ্জীবন কারাদণ্ড

সিএনআই নিউজ টুয়েন্টিফোর
  • আপডেট সময় : 5:46 pm, মঙ্গলবার, ১১ জুন, ২০২৪

কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে ১৩ বছর বছর বয়সী এক স্কুলছাত্রী ধর্ষণের দায়ে আলাউদ্দিন (৫২) নামে এক ব্যক্তিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে তাকে দুই লাখ টাকা অর্থদণ্ড প্রদান করা হয়েছে। ধর্ষণের ফলে ওই কিশোরী অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ে এবং ছেলে সন্তানের জন্ম দেয়।
মঙ্গলবার (১১ জুন) দুপুর সাড়ে ১২টায় কুমিল্লার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১ আদালতের বিচারক (জেলা ও দায়রা জজ) মোহাম্মদ আবদুল্লাহ আল মামুন এ রায় ঘোষণা করেন।
দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি মো. আলাউদ্দিন বরিশাল সদর উপজেলার কুন্ডলীপাড়া গ্রামের মৃত আক্কাস আলীর ছেলে।
ওই আদালতের রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী স্পেশাল পিপি প্রদীপ কুমার দত্ত বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। রায় ঘোষণার সময় আসামি আদালতে উপস্থিত ছিলেন বলে জানান তিনি।
অ্যাডভোকেট প্রদীপ কুমার দত্ত মামলার বিবরণে জানান, আসামি মো. আলাউদ্দিন চৌদ্দগ্রামে কসমেটিকস ব্যবসা করবেন।
২০২০ সালের ১৮ জুলাই সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত যেকোনো সময় ১৩ বছর বয়সী ওই শিক্ষার্থী ২০ টাকা নিয়ে আসামির ঘরে চোখের কাজল কিনতে যায়। এ সময় তাকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করেন আলাউদ্দিন। পরে ভিকটিমকে প্রাণে মেরে ফেলার ভয়ভীতি দেখিয়ে ঘটনাটি কাউকে না বলার জন্য হুমকি দেন তিনি। ঘটনার কয়েক মাস পর স্কুলছাত্রী অসুস্থ হয়ে পড়লে ২০২১ সালের ১১ জানুয়ারি তাকে চৌদ্দগ্রাম স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে চিকিৎসক জানান, ওই কিশোরী অন্তঃসত্ত্বা।
পরে নির্যাতিত কিশোরীকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে সে পুরো ঘটনা খুলে বলে।
এ ঘটনায় চৌদ্দগ্রাম উপজেলার আটগ্রামের বাসিন্দা ভিকটিমের বাবা পরদিন বাদী হয়ে আলাউদ্দিনকে আসামি করে চৌদ্দগ্রাম থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। পরে আসামিকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠায় পুলিশ। ঘটনার মূল রহস্য উদঘাটন করে ২০২১ সালের ১৮ জুলাই আসামির বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র (চার্জশিট) দাখিল করেন তদন্ত কর্মকর্তা। এ মামলায় সাতজন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে আদালত আসামি আলাউদ্দিনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং ২ লাখ টাকা অর্থদণ্ড অনাদায়ে আরো দুই মাসের কারাদণ্ড প্রদান করেন।
অ্যাডভোকেট প্রদীপ কুমার দত্ত জানান, আদালত রায়ে বলেছেন- ধর্ষণের কারণে ভিকটিমের গর্ভে যে পুত্র সন্তান জন্মগ্রহণ করেছে, তাকে তার মা কিংবা তার আত্মীয়-স্বজনের তত্ত্বাবধানে রাখা যাবে। সন্তানটি তার পিতা বা মাতা কিংবা উভয় পরিচয়ে পরিচিত হতে অধিকারী। সন্তানের বয়স ২১ বছর না হওয়া পর্যন্ত তার ভরণপোষণের ব্যয় রাষ্ট্র বহন করবে। সন্তানের ভরণপোষণের জন্য প্রদেয় অর্থ সরকার ধর্ষক আলাউদ্দিনের নিকট হতে আদায় করতে পারবে। আর আসামির বিরুদ্ধে আরোপিত অর্থদণ্ডের অর্থকে ধর্ষণের শিকার ভিকটিমের ক্ষতিপূরণ হিসেবে গণ্য করা রয়েছে। এ ছাড়া দণ্ডিত অর্থ ভিকটিমের বরাবর পরিশোধ না করলে ক্ষতিপূরণের অর্থ আদায়ের নিমিত্তে আসামির স্থাবর ও অস্থাবর সম্পত্তি নিলামে বিক্রি করে বিক্রয়কৃত অর্থ ভিকটিমকে ক্ষতিপূরণ হিসেবে পরিশোধ করার জন্য জেলা কালেক্টর, কুমিল্লাকে নির্দেশ প্রদান করা হয়েছে।
এই রায়ে রাষ্ট্রপক্ষ সন্তোষ প্রকাশ করেছেন বলে জানান অ্যাডভোকেট প্রদীপ কুমার দত্ত।

সংবাদটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

এই রকম আরো জনপ্রিয় সংবাদ
© All rights reserved © 2017 Cninews24.Com
Design & Development BY Hostitbd.Com