শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬:৪২ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
কাজিপুরে চরাঞ্চলে রবি মৌসুমের মসলা জাতীয় ফসলের আবাদ বেড়েছে আফ্রিদির সঙ্গে সম্পর্কের টানাপোড়েন উড়িয়ে দিলেন বাবর নির্বাচনে কে কার আত্মীয় ইসির তা দেখার বিষয় না নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির দ্বিতীয় বৈঠক অনুষ্ঠিত ‘ইসলামিক মূল্যবোধ লঙ্ঘন’, ২ টিভি চ্যানেল বন্ধ করল তালেবান বিএনপি আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল নয় : ওবায়দুল কাদের মুস্তাফিজের বিকল্প ক্রিকেটার নিয়ে নিল চেন্নাই? মন্ত্রী-সংসদ সদস্যদের সন্তান-স্বজনের ভোট করতে মানা কাজিপুরে প্রাণিসম্পদ সেবা সপ্তাহ ও প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত যুক্তরাষ্ট্র স্বতন্ত্রভাবে বাংলাদেশকে দেখা বন্ধ করেছে কবে, জানালেন আসিফ নজরুল

পলাতক রাজাকার ইদ্রিস আলীকে মৃত্যুদণ্ড দিয়ে রায় ঘোষণা

রিপোর্টার নাম
  • আপডেট সময় : 7:55 pm, সোমবার, ৫ ডিসেম্বর, ২০১৬
ফাইল ছবি : সিএনআই নিউজ

ফাইল ছবি : সিএনআই নিউজ

সিএনআই নিউজ : মুক্তিযুদ্ধকালীন মানবতাবিরোধী অপরাধে শরীয়তপুরের রাজাকার বাহিনীর সদস্য পলাতক যুদ্ধাপরাধী ইদ্রিস আলী সরদারকে মৃত্যুদণ্ড দিয়ে আজ রায় ঘোষণা করেছে ট্রাইব্যুনাল।
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি আনোয়ারুল হকের নেতৃত্বে তিন সদস্যের বিচারিক প্যানেল সংখ্যাগরিষ্ঠের মতের ভিত্তিতে এ রায় ঘোষণা করে। এটি ট্রাইব্যুনালে ঘোষিত ২৭ তম রায়।
এ মামলায় ৪৮৬ পৃষ্ঠার রায়ের সংক্ষিপ্তসার পড়া হয়। রায়ে বলা হয়, প্রসিকিউশনের আনা চার অভিযোগের সবগুলোই প্রমাণিত হয়েছে। ফাঁসিতে ঝুলিয়ে অথবা গুলি করে আসামি ইদ্রিস আলী সরদারের সাজা কার্যকর করতে হবে।
চার অভিযোগের মধ্যে প্রথম অভিযোগ ও দ্বিতীয় অভিযোগে ইদ্রিস আলীর মৃত্যুদন্ড, তৃতীয় অভিযোগে আমৃত্যু কারাদন্ড এবং চতুর্থ অভিযোগে তাকে সাত বছরের কারাদন্ড দেয়া হয়। আসামি ইদ্রিসকে গ্রেফতার করে সাজা কার্যকর করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
এ মামলায় কারাবন্দি অপর আসামি সোলায়মান মোল্লা গত ২৫ অক্টোবর ঢাকা মেডিকেল কলেজে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। এ কারণে তার নাম মামলা থেকে বাদ দেয়া হয়।
প্রসিকিউটর জেয়াদ আল মালুম রায়ের প্রতিক্রিয়ায় এ আসামির সর্বোচ্চ সাজার রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করেন । নিয়ম অনুযায়ী মামলায় রায়ের এক মাসের মধ্যে আপিল করা যায়। তবে পলাতক ইদ্রিসকে সে সুযোগ নিতে হলে আত্মসমর্পণ করতে হবে।
ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা জানায়, শরীয়তপুর সদর উপজেলার চিতলিয়া ইউনিয়নের পালং থানার পশ্চিম কাশাভোগ গ্রামের ইদ্রিস আলী সরদার স্থানীয় রুদ্রকর নিনমনি হাই স্কুল থেকে ১৯৬৬ সালে এসএসসি পাস করেন। ওই স্কুলে পড়ার সময়ই তিনি জামায়াতে ইসলামীর তখনকার ছাত্র সংগঠন ইসলামী ছাত্র সংঘের সঙ্গে যুক্ত হন। বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় ইদ্রিস ছাত্র সংঘের স্থানীয় নেতায় পরিণত হন। ছাত্রসংঘের অন্য অনেক নেতাকর্মীর মত তিনিও পাকিস্তানি বাহিনীর সহযোগিতায় গড়ে তোলা রাজাকার বাহিনীতে যোগ দেন এবং যুদ্ধাপরাধে অংশ নেন।
শরীয়তপুর সদর উপজেলার স্বর্ণঘোষ গ্রামের যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা আব্দুস সামাদ তালুকদার ২০১০ সালের ১১ মে ইদ্রিস আলী ও সোলায়মান মোল্লার বিরুদ্ধে শরীয়তপুরের আদালতে মামলা করেন। ওই মামলা পরে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে প্রেরণ করা হয়। পরে ট্রাইব্যুনালের তদন্ত কর্মকর্তা (আইও) হেলাল উদ্দিন অনুসন্ধান শেষে ইদ্রিস ও সোলায়মানের বিরুদ্ধে গত বছরের ২৯ অক্টোবর তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করা হয়। এর আগে গত বছরের ১৪ জুন সোলায়মান ও ইদ্রিসের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়। এ প্রতিবেদনের ভিত্তিতে গত বছরের ১৬ নভেম্বর প্রসিকিউশন দুই আসামির বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল করে। গত বছর ২২ ডিসেম্বর অভিযোগ আমলে নেয় ট্রাইব্যুনাল। গত ২ মে হত্যা, গণহত্যা, ধর্ষণ, নির্যাতন, লুন্ঠন, অগ্নিসংযোগসহ মানবতাবিরোধী অপরাধের চারটি অভিযোগে আসামীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়।
মামলায় আনীত-প্রথম অভিযোগে বলা হয়েছে, ১৯৭১ সালের ২২ মে আসামিরা দখলদার পা হানাদারবাহিনীর ১০০ থেকে দেড়শ’ জন সদস্যসহ শরীয়তপুর জেলার পালং থানা এলাকায় কয়েকটি গ্রামে হামলা চালিয়ে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের কৃষক আব্দুস সামাদসহ হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রায় ২০০ মানুষকে গুলি করে হত্যা ও বাড়ির মালামাল লুট করেন।
দ্বিতীয় অভিযোগে বলা হয়েছে, মুক্তিযুদ্ধকালীন ২৬ মে পালং থানার মালোপাড়া ও রুদ্রকর গ্রামে হামলা চালিয়ে মঠের পুরোহিতকে গুলে করে হত্যা ও গ্রামগুলো থেকে মামালাল লুট ও আগুনে পুড়িয়ে ধ্বংস করে আসামিরা। ওইদিন মালোপাড়া থেকে ৩০/৪৫ জন নারী ও পুরুষকে ধরে মাদারীপুর পাক হানাদার ক্যাম্পে নিয়ে তিনদিন আটকে রেখে নারীদের ধর্ষণ করে ছেড়ে দেয়। পুরুষদের গুলি করে হত্যা করা হয়।
তৃতীয় অভিযোগে বলা হয়েছে, মুক্তিযুদ্ধকালীন ২৬ জুন একই থানার শৈলেন্দ্র কৃষ্ণ পালের বাড়িতে হামলা চালিয়ে দুইজনকে হত্যা করে ও হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষদের নির্যাতন করে বেয়নেট দিয়ে খুঁচিয়ে খুচিঁয়ে হত্যা করে আসামিরা।
চতুর্থ অভিযোগে বলা হয়েছে, ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ থেকে ১০ ডিসেম্বর পর্যন্ত আসামিরা দখলদার বাহিনীর সহায়তায় এলাকায় হত্যা, গণহত্যা, ধর্ষণ, নির্যাতনসহ বিভিন্ন অপরাধ করেন। এ সময় মানবতাবিরোধী অপরাধ করার মাধ্যমে মানুষের মধ্যে ভয়-ভীতি ও আতঙ্কের সৃষ্টি করে পালং থানার এক থেকে দেড় হাজার মানুষকে দেশত্যাগ করতে বাধ্য করেন। তারা ভারতের শরণার্থী শিবিরে গিয়ে আশ্রয় নেন।

সংবাদটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

এই রকম আরো জনপ্রিয় সংবাদ
© All rights reserved © 2017 Cninews24.Com
Design & Development BY Hostitbd.Com