কায়সার হামিদ মানিক, কক্সবাজার প্রতিনিধি : কক্সবাজারের উখিয়া-টেকনাফ উপকূল দিয়ে মালয়েশিয়া মানব পাচার থামছেনা। সাগর পথে আবার পাচারকারী সক্রিয় হয়ে উঠেছে। এবার তাদের টার্গেট রোহিঙ্গারা। পাশাপাশি কিছু বাংলাদেশীকেও রোহিঙ্গাদের মাছ ধরার নৌকায় সাগর পাড়ি দিয়ে মালয়েশিয়া নিয়ে যাচ্ছে। পাচারকারী চক্রের প্রলোভনে পড়ে বহু মানুষ বড় অংকের টাকা দিয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পাড়ি দিচ্ছে উত্তাল সাগর। অনেকেই মালয়েশিয়া পৌছতে পারলেও সেখানে তারা পুলিশের হাতে আটক হচ্ছেন। সম্প্রতি মালয়েশিয়া পুলিশ সাগর পথে যাওয়া ৫৬ জনকে আটক করেছে। বাংলাদেশ কোষ্টগার্ড বঙ্গপসাগর দিয়ে মাছ ধরার নৌকায় মালয়েশিয়া যাওয়ার চেষ্টা কালে টেকনাফ থেকে কয়েক দফায় ৩ শ এর বেশি রোহিঙ্গা সহ কয়েক বাংলাদেশীকে আটক করেছে। ২০১৫ সালের সাগর পথে মালয়েশিয়া যাওয়ার সাগরে ডুকে কয়েক হাজার মানুষ মারা যায়। এছাড়া থাইল্যান্ডের কয়েকটি বড় গণকবর পাওয়া যায়। এর সরকারের পক্ষ থেকে মানব পাচার বন্ধের জন্য বিভিন্ন ধরনের উদ্যোগে নেওয়া হয়। কিছুদিন মানব পাচার বন্ধ থাকার পর আবার এটি শুরু হয়েছে।
সূত্রে জানা গেছে, নানা প্রলোভন দেখিয়ে পাচারকারীরা কক্সবাজারের উখিয়া-টেকনাফের বিভিন্ন শরণার্থী ক্যাম্প থেকে রোহিঙ্গা নারী-পুরুষদের পাচার করছে বলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। পাচারকারীদের হাত থেকে রেহাই পাচ্ছে না শিশুরাও। মাঝেমধ্যে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযানে পাচারকারীদের দালাল ও ভুক্তভোগী রোহিঙ্গারা আটকও হচ্ছে। তবু থামছে না পাচার। শূক্রবার টেকনাফে ১১৫ জন মালয়েশিয়াগামী যাত্রীকে পুলিশ আটক করেছে। এর মধ্যে ২৬ শিশু, ৩৯ নারী ও ৫০ জন পুরুষ রয়েছে। এর আগে টেকনাফ বিজিবি ২৭ জন মালয়েশিয়াগামী রোহিঙ্গা ও উখিয়া থানা পুলিশ ৩১ জন রোহিঙ্গা নারী পুরুষকে আটক করেছে। বিশেষ করে উখিয়ার মনখালী এলাকার আবুল কালাম, আবুল ফয়েজ এদের নেতৃত্বে রোহিঙ্গা ক্যাম্প ভিত্তিক মানব পাচার সিন্ডিকেট গঠন করে তারা এ কাজ চালিয়ে যাচ্ছে।
উখিয়ার সোনার পাড়া, রেজুখাল, ইনানী, ছেপটখালী, মনখালী, ছোয়াংখালী, টেকনাফের বাহারছড়া, সাবরাং, শাহপরীর দ্বীপ, কচ্চপিয়া, শামলাপুর এলাকার বিভিন্ন পয়েন্ট দিয়ে মালশিয়ায় আদম পাচার চলছে। টেকনাফ মডেল থানার ওসি প্রদীপ কুমার দাশ জানান, মানব পাচারকারীদের চিহ্নিত করে তাদের গ্রেফতার করতে পুলিশ কাজ করছে। উখিয়া থানার ওসি মোঃ আবুল খায়ের জানান, উপকূল মানব পাচারকারী চক্রের সদস্যদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনা হবে।