সিএনআই নিউজ : টালার পর এবার ময়দান। প্র্যাকটিস ম্যাচ চলাকালীন মাঠেই সংজ্ঞাহীন হয়ে পড়লেন এক উঠতি ক্রিকেটার। হাসপাতালে নিয়ে আসার পথেই মৃত্যু হয় সোনু যাদব নামে ওই খেলোয়াড়ের। বুধবার সকালে এই ঘটনা ঘটে ময়দানে। হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে ক্রিকেটার সোনু যাদবের (২২) মৃত্যু হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে অনুমান চিকিৎসকদের। মৃতদেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। এখনও পর্যন্ত তাঁর পরিবারের তরফে পুলিসের কাছে কোনও অভিযোগ দায়ের করা হয়নি। অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করে তদন্ত করছে পুলিস। কী কারণে তাঁর মৃত্যু হল, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
একবালপুরের বাসিন্দা সোনু যাদব বেশ কিছুদিন ধরে বালিগঞ্জ স্পোর্টিং ক্লাবের হয়ে খেলতেন। উইকেটকিপার-ব্যাটসম্যান হিসেবে যথেষ্ট সুনাম কুড়িয়েছিলেন তিনি। এই মরশুমে ভালো রানও করছিলেন। ক্রমশ দলকে নির্ভরতা জোগাচ্ছিলেন। বুধবার ক্লাবের কোনও অনুশীলন ছিল না। সোনু ও তাঁর কয়েকজন বন্ধু ঠিক করেন, ময়দানে বাটা ক্লাবের মাঠে প্র্যাকটিস ম্যাচ খেলবেন। সেইমতো সকাল ১০টা নাগাদ তাঁরা সেখানে হাজির হন। নিজেদের মধ্যেই টিম করে খেলছিলেন তাঁরা। ওপেনার আউট হওয়ার পর ব্যাট করতে আসেন সোনু। অনেকক্ষণ ব্যাট করার পর শেষে আউট হন। আউট হওয়ার পরই মাঠের এককোণে গিয়ে বসে পড়েন। মাথা ঘুরে পড়ে যান। সহ খেলোয়াড়রা সঙ্গে সঙ্গেই তাঁর শুশ্রূষা শুরু করেন। চোখেমুখে জল দেন। সোনুর সঙ্গে প্র্যাকটিস ম্যাচে অংশ নেওয়া নীরজ কুমারের বক্তব্য, আউট হয়ে যাওয়ার পর থেকেই শারীরিকভাবে অসুস্থ বোধ করছিলেন সোনু। প্রথমবার মাথা ঘুরে পড়ে যাওয়ার পর তাঁরাই তাঁর চোখমুখে জল দেন। সকলকে আশ্বস্ত করে সোনু বলেন, কিছু হয়নি, ঠিকই আছেন। এর অল্প কিছুক্ষণের মধ্যেই দ্বিতীয়বার মাথা ঘুরে পড়ে যান তিনি। সংজ্ঞাহীন হয়ে পড়েন কয়েক মিনিটের জন্য। বাকিরা এরপর আর ঝুঁকি নেননি। মাঠে কোনও মেডিক্যাল ইউনিট না থাকায়, একজনের বাইকের পিছনে বসিয়ে তাঁকে সিএবিতে নিয়ে আসা হয়। নীরজের বক্তব্য, সেখানে আনার পর চিকিৎকরা তাঁর পালস ও প্রেসার চেক করেন। হার্ট বিট অত্যন্ত কম থাকায় সিএবির ডাক্তাররা তাঁকে এসএসকেএমে নিয়ে যেতে বলেন। এরপরই তাঁকে অ্যাম্বুলেন্সে করে নিয়ে যাওয়া হয় এসএসকেএমে। কিন্তু গাড়িতেই ফের সংজ্ঞাহীন হয়ে পড়েন সোনু। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পর চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।
ঘটনার খবর পেয়েই অন্যান্য ক্লাবের খেলোয়াড়রা হাসপাতালে চলে আসেন। মাঠে চিকিৎসার উপযুক্ত পরিকাঠামো নেই বলে তাঁদের দাবি। তা থাকলে সোনুর এভাবে মৃত্যু হতো না। সোনুর বন্ধুদের বক্তব্য, বড় ক্রিকেটার হওয়ার স্বপ্ন দেখতেন সোনু। প্র্যাকটিসে নিয়মিত হাজির থাকতেন। কোচ থেকে শুরু করে সকলের অত্যন্ত প্রিয় ছিলেন। পেশাদার টি-টোয়েন্টি দলে খেলার ইচ্ছা ছিল সোনুর। তিন ভাইয়ের মধ্যে সোনুই ছিলেন বড়। বাবা-মা থাকেন বিহারে। তাঁর বন্ধুরাই ভাইদের ফোন করে দুঃসংবাদ জানান। সঙ্গে সঙ্গেই সকলে চলে আসেন হাসপাতালে। সোনুর বাবা-মা বিহার থেকে আসছেন। উঠতি এই ক্রিকেটারের মৃত্যুতে ময়দানে শোকের পরিবেশ নেমে এসেছে।