সাবিবর হোসেন : এসআই সেকান্দার ও এএসআই মাজহারুলকে প্রত্যাহার,
সাটুরিয়া থানার দুই পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ধর্ষন ও মাদক ব্যবসাসহ নানা অভিযোগ ।
সাটুরিয়া থানার এক এসআই ও এএসআইয়ের বিরুদ্ধে নারী ধর্ষন, মাদক ব্যবসা, মিথ্যে মামলায় ফাঁসিয়ে অর্থ আদায় ও ক্ষমতার অপ-ব্যবহারের অভিযোগ পাওয়া গেছে। সম্প্রতি এদের ধর্ষনের অভিযোগে থানা থেকে প্রত্যাহার করে মানিকগঞ্জ পুলিশ লাইনে নেয়া হয়েছে। মানিকগঞ্জের পুলিশ সুপার রিফাত রহমান তাদের প্রত্যাহারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
অভিযোগ, ঢাকার আশুলিয়ার এক তরুনীর সাথে সখ্যতা থাকার সুবাদে তার কাছ থেকে এক লাখ টাকা হাওলাত নিয়ে জমি কেনেন সাটুরিয়া থানার এসআই সেকেন্দার হোসেন। সেই জমি বিক্রি করার পর তার লাভের তিন লাখ টাকা দেয়ার কথা বলে গত বুধবার (৬ ফেব্রুয়ারী) সাটুরিয়া ডাক বাংলোতে খবর দিয়ে আনেন সেই তরুনীকে। তার এক ভাগ্নিও সে সময় সাথে ছিল।
ডাকবাংলোর ভিতর সাটুরিয়া থানার এসআই সেকেন্দার হোসেন ও এএসআই মাজহারুল ইসলাম তাদের অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে ইয়াবা সেবন করায় এবং দুইদিন আটকে রেখে তরুনীর ভাগ্নিকে পালাক্রমে ধর্ষন করে।
পরে রোববার মানিকগঞ্জ পুলিশ সুপারের কাছে ওই দুই পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ করেন নির্যাতিতা।
এ ঘটনার পর এসআই সেকেন্দার ও এএসআই মাজহারুলকে প্রত্যাহার করা হয়।
এই দুই পুলিশ কর্মকর্তার অত্যাচারে সাটুরিয়াবাসী অতিষ্ট হয়ে পরেছিল বলে আরো অভিযোগ পাওয়া গেছে। সেকেন্দার ও মাজহারুল পুলিশ কর্মকর্তা হয়েও নিজেরা প্রকাশ্যে মাদক সেবন ও ব্যবসা করে আসছিল। এছারাও মাদকদ্রব্য রেখে তা সাধারণ জনগনের পকেটে কৌশলে ঢুকিয়ে দিয়ে তাদের কাছ থেকে অর্থ আদায় ও মিথ্যে মামলায় ফাঁসিয়ে দেয়ার ঘটনা নিত্য নৈমিত্যিক ব্যাপার। কথায় কথায় বিভিন্ন লোকজনকে প্রকাশ্যে মারধোর করে আসছিল এএসআই মাজহারুল। বিভিন্নভাবে এই দুই পুলিশ কর্মকর্তা ক্ষমতার অপ-ব্যবহার করেছে বলে জানায় পুলিশের একাধিক গোয়েন্দা সংস্থা। মনিকগঞ্জ পুলিশ লাইনে এদের প্রত্যাহার করে নেয়ায় স্বস্থির নি:শ্বাস ফেলেছেন সাটুরিয়ার ভুক্তভোগীরা।
উত্তর কাওন্নারা গ্রামের সাংস্কৃতিক কর্মী উজ্জল হোসেন ও তার স্ত্রী রিনা আক্তার জানান, সম্প্রতি মাজহারুল ও করিম উজ্জলকে দুই’শ পুড়িয়া হেরোইন ও দশটি ইয়াবা বড়ির একটি মিথ্যে মামলা দিয়ে ফাঁসিয়ে মোটা অংকের অর্থ আদায় করে। এরপর তাকে ছেড়ে না দিয়ে জেলে পাঠানো হয়।
সাটুরিয়া বাজারের কাজলের ছেলে টিটু ও সিরাজের ছেলে রাব্বি জানান, তাদের সামান্য বিষয়ে প্রকাশ্যে মারধোর করলে এ নিয়ে সাটুরিয়া বাজার কমিটিতে বিচার হয়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সাটুরিয়ার অনেকেই জানান, এদের অত্যাচারে অতিষ্ট ছিল সটিুরিয়াবাসী। এরা প্রকাশ্যে মাদক সেবন ও তা বিক্রি করে আসছিল। সাটুরিয়ায় অনেক অপ-কর্মের হোতা এসআই সেকেন্দার ও এএসআই মাজহারুল।
এসআই সেকেন্দার হোসেন বলেন, এক নারী তার কাছে পাওনা টাকার জন্য সাটুরিয়া এসেছিলেন। তাকে কিছু টাকাও দেওয়া হয়েছে। তবে, এএসআই মাজহারুলের সাথে এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
সাটুরিয়া থানার ওসি আমিনুর ইসলাম বলেন, শনিবার রাতে পুলিশ সুপার ওই দুই পুলিশ কর্মকর্তাদেরকে সাটুরিয়া থানা থেকে প্রত্যাহার করে পুলিশ লাইনে নিয়েছেন।
মানিকগঞ্জের পুলিশ সুপার রিফাত রহমান শামিম জানান, নারীর অভিযোগের প্রেক্ষিতে মানিকগঞ্জ সদর সার্কেলকে প্রধান করে একটি তদন্ত টিম গঠন করা হয়েছে। তদন্ত সাপেক্ষে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ঘটনা প্রমাণিত হলে তাদেরকে আইনের আওতায় আনা হবে। পুলিশ সদস্য হিসেবে তাদেরকে কোন ছাড় দেয়া হবে না।
Leave a Reply